কম খরচে পুষ্টিকর খাবার রেসিপি(বাচ্চাদের) – সহজ, সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর
আপনার ছোট সোনাকে খাওয়ানো একেবারেই সহজ কাজ নয়। যখন প্রথমবারের মতো নতুন খাবার খাওয়ানো হয়, তখন তারা অনেক সময় সেটি পছন্দ করে না। কারণ, বেশিরভাগ বাচ্চা বুকের দুধ বা প্যাকেটের দুধেই অভ্যস্ত হয়ে থাকে। তাই নতুন স্বাদের খাবারে তাদের ভাল লাগতে একটু সময় লাগে।
অনেক বাচ্চা মিষ্টি স্বাদের খাবার পছন্দ করে, কিন্তু তারাও সকলকেই পছন্দ করে না। আপনি যদি কিছু বিশেষ রেসিপি তৈরি করে দেখান, তাহলে দেখুন ওরা কী অনুভব করে। শুধু মনে রাখবেন, বাচ্চার খাবারে বেশি চিনির ব্যবহার করবেন না।
পোস্ট সুচিপত্রঃ কম খরচে পুষ্টিকর খাবার রেসিপি(বাচ্চাদের) – সহজ, সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর
- আপেল, গাজর, কুমড়ো বা মিষ্টি আলুর ভর্তা কিভাবে বানাবেন
- আপেল সস তৈরি কিভাবে করবেন
- সুজি ক্ষীর বাড়াতে সহজ রেসিপি
- গাজর বা বিটের স্যুপ তৈরি সহজ
- ওটস উপমা তৈরির সহজ পদ্ধতি
- ৮ মাস বয়সি শিশুর জন্য সহজ ও সুস্বাদু রেসিপি
- কলার প্যানকেক কীভাবে বানাবেন
- সুজি ও কলার হালুয়া বানানোর সহজ পদ্ধতি
- কলার কুকিজ কিভাবে বানাবেন
- আপেল মাফিন কিভাবে বানাবেন
- কলা ও ওটস দিয়ে সুস্বাদু স্মুদি কীভাবে বানাবেন
আপেল, গাজর, কুমড়ো বা মিষ্টি আলুর ভর্তা কিভাবে বানাবেন
আধখানা আপেল, বা একটি গাজর, আধ কাপ কুচানো কুমড়ো, বা আধখানা মিষ্টি আলু
এক চা-চামচ এলাচ গুঁড়ো
আরো পড়ুনঃ ডায়েট মেনে সুস্থ খাবার: ওজন কমাতে ঘরেই রান্না করুন এই ১০টি সহজ ও পুষ্টিকর রেসিপি
প্রক্রিয়া:
প্রথমে যে সব্জি বা ফল ভর্তা বানাবেন, তার খোসা ছাড়ুন।
সবজি বা ফল একসাথে একটি বাটিতে রাখুন। প্রেসার কুকারে দিয়ে ৩-৪ সিটি দিন।
ঠান্ডা হলে চামচ দিয়ে মিশে ভর্তার মতো করে নিন।
প্রয়োজনে এলাচ গুঁড়ো যোগ করুন।
আবশ্যক হলে, একটু বুকের দুধ বা বাচ্চার যে দুধ খান, মিশিয়ে দিন।
আপেল সস তৈরি কিভাবে করবেন
অতিপ্রচলিত প্রশ্ন হলো, আপেল ভর্তা আর আপেল সসে পার্থক্য কী?
আসলে, আপেল ভর্তা বানাতে জল বা চিনি দরকার পড়ে না।
অন্যদিকে, আপেল সস বানাতে জল ও চিনি লাগে।
চিনির প্রয়োজন নেই, যদি আপনি চান না।
উপকরণ:
দুটি আপেল
অর্ধ কাপ জল
এক চা-চামচ চিনি (শুধু যদি সন্তানকে চিনি দিতে চান)
প্রণালী:
আপেলগুলো ভালো করে ধুয়ে খোসা ছাড়ান।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ৫টি দেশীয় খাবার: যেগুলো খেলে সুগার থাকবে নিয়ন্ত্রণে
কুচিয়ে নিয়ে রান্নার পাত্রে ফেলুন।
অর্ধ কাপ জল দিন।
মাঝারি আঁচে কিছুক্ষণ ফুটতে দিন।
আপেল স্বাদ অনুযায়ী এলাচ বা জায়ফল দিতে পারেন।
নরম হলে, রান্না হয়ে গেলে, পেস্টের মতো করে নিন।
সুজি ক্ষীর বাড়াতে সহজ রেসিপি
উপকরণঃ
অর্ধেক কাপ সুজি
দুই কাপ পানি
আধা চা-চামচ এলাচ বা জায়ফল গুঁড়ো
শুকনো ফলের পাউডার
প্রণালীঃ
প্রথমে তাওয়াতে সুজিটা হালকা করে ভেজে নিন। এরপর অন্য একটি পাত্রে পানি ফুটতে দিন। পানি ফুটলে সুজি দিয়ে দিন এবং নাড়াতে থাকুন যেন গুটিকি না হয়। পানি কমে এলে সামান্য গিয়ে দিয়ে নিন। ভালভাবে মিশে গেলে ঘি যোগ করুন। তারপর এলাচ বা জায়ফলগুঁড়ো ও শুকনো ফলের পাউডার মেশান। এইভাবে সুজি ক্ষীর তৈরি হয়ে যায়।
গাজর বা বিটের স্যুপ তৈরি সহজ
উপকরণঃ
একটা বিট (অর্ধেক)
একটা গাজর (অর্ধেক)
এক চা-চামচ ঘি
প্রণালীঃ
গাজর ও বিট ভালো মত ধুয়ে প্রেসার কুকারে রান্না করুন। সেদ্ধ হলে ঠাণ্ডা করে ভাল করে মিশিয়ে নিন। খাসি জন্য, তিনি চাইলে ঘি আর নুন যোগ করতে পারেন। এই খাবার ৭ মাসের শিশুর জন্য খুব পুষ্টিকর।
ওটস উপমা তৈরির সহজ পদ্ধতি
প্রথমে, আধ কাপ ওটস ভালো করে থেঁতো করে নিন। এরপর, তার মধ্যে আধ কাপ তাজা টম্যাটোর রস মিশান। একটি চা-চামচ ঘি যোগ করুন। তারপর, সব উপাদান মিশিয়ে রাখতে হবে আধ কাপ জল।
আরো পড়ুনঃ খালি পেটে চিরতা পাতা খাওয়ার উপকারিতা
প্রণালী শুরু সহজ থেকে—একটু জল নিয়ে ওটসগুলো আধ মিনিটের জন্য রেখে দিন, যাতে তারা নরম হয়ে যায়। এরপর, একটি প্রেসার কুকারে ওটস, টম্যাটোর রস, ঘি এবং জল দিয়ে দিন। সেটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ২টি সিটি হয়ে যাওয়ার জন্য রান্না করুন।
৮ মাস বয়সি শিশুর জন্য সহজ ও সুস্বাদু রেসিপি
উপকরণঃ
একটি ছোট পাত্র বিট
এক চা-চামচ ঘি
এক চা-চামচ শুকনো ফলের গুড়ো
এক চা-চামচ এলাচ গুঁড়া
এক কাপ জল
এক চামচ ঘরে বানানো খেজুরের রস
প্রণালীঃ
বিট ছোট করে কেটে নিন বা ঝালিয়ে দেখুন যেন রোস্ট হয়।
একটি পাত্রে ঘি গরম করুন। এরপর শুকনো ফলের গুড়ো আর এলাচ গুঁড়া দিয়ে নাড়ুন।
৫ মিনিট নাড়ার পর বিট যোগ করুন। এরপর ১০ মিনিট রান্না করুন।
বিটের কাঁচা গন্ধ চলে গেলে ফেলার সময়।
এখন এতে খেজুরের রস মিশিয়ে দিন।
ঠাণ্ডা হলে শিশুর জন্য পরিবেশন করুন।
কলার প্যানকেক কীভাবে বানাবেন
উপকরণঃ
একটা পাকা কলা
একটা ডিম
এক চা-চামচ মাখন
প্রণালীঃ
একটি বাটিতে কলাটা ভালো করে চটকে মেখে নিন।
একটু আলাদা বাটিতে ডিম ফাটিয়ে ফেটিয়ে নিন।
এর পর ডিমের সাথে কলা মিশিয়ে দিন।
প্যানে মাখন গরম করে রাখুন।
গরম হলে, ডিম ও কলার মিশ্রণ ঢালুন।
ধোসার মতো দেখতে হলে পাতলা করে ঢালুন।
যখন নিচের দিকে বাদামী হয়ে যাবে, তখন গ্যাস বন্ধ করে দিন।
সুজি ও কলার হালুয়া বানানোর সহজ পদ্ধতি
প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
পাকা কলা একটি
সুজি এক টেবিল চামচ
ঘি এক চা-চামচ
গরম জল এক কাপ
প্রণালীঃ
একটি পাত্রে ঘি ও সুজি নিন। সুজিকে বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
তারপর গরম জল দিয়ে দিন।
কিছুক্ষণ ঠাণ্ডা হলে, চটকে রাখা কলা ভালো করে সুজির মধ্যে দিয়ে মিশিয়ে নিন।
অল্প আঁচে রান্না করে মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে খাবারে পরিবেশন করুন।
কলার কুকিজ কিভাবে বানাবেন
উপকরণগুলো হলোঃ
২টা পাকা কলা
১ টেবিল চামচ আপেল সস
১ টেবিল চামচ শুকনো ফলের গুড়ো
১ চা-চামচ দারচিনি গুড়ো
প্রক্রিয়া শুরু করতে, প্রথমে ওভেন কিছুক্ষণ আগে ১৮০ ডিগ্রি তে গরম করে নিন।
একটা বড় পাত্রে কলা, আপেল সস, শুকনো ফলের গুড়ো, আর দারচিনি ভালো করে মিশিয়ে নিন।
মিশ্রণটি থেকে ছোট ছোট বল করে নিন। এরপর সেগুলো হালকা করে চ্যাপ্টা করে কুকিজের আকার দিন।
বেকিং ট্রেতে খুব অল্প মাখন মেখে রাখুন, তার উপর কুকিজগুলো সাজান।
২০ মিনিটের জন্য ওভেনে বেক করুন।
সবশেষে, ঠাণ্ডা হয়ে গেলে কুকিজগুলো এয়ারটাইট কৌটোয় রেখে রাখুন।
আপেল মাফিন কিভাবে বানাবেন
উপকরণঃ
একটি পাকা কলা
একটি আপেল
হাফ কাপ দুধ
এক তৃতীয় কাপ আপেল ভর্তা
এক চা-চামচ দারচিনি গুঁড়া
এক টেবিল চামচ বাদাম গুঁড়া
এক টেবিল চামচ তেল
দুটি ফেটানো ডিম
প্রণালিঃ
একটু চটকানো কলা, কাটা আপেল, দারচিনি গুঁড়া ও বাদাম মিশিয়ে ভাল করে একসঙ্গে মিশান।
আরো একটা পাত্রে দুধ, তেল আর ডিম নিন। সব মিশিয়ে নিন যত্ন নিয়ে।
এরপর দুটো মিশ্রণ একসাথে ঢালুন এবং মাফিন ট্রেতে সাজান।
আগে থেকে গরম করে রাখা ওভেনে ট্রে দিয়ে প্রায় ৩৫ মিনিট baking করুন।
কলা ও ওটস দিয়ে সুস্বাদু স্মুদি কীভাবে বানাবেন
উপকরণঃ
একটি পাকা কলা
এক টেবিল চামচ থেঁতো করা ওটস
এক কাপ দুধ
এক টেবিল চামচ ভেলি গুড়
এক টেবিল চামচ বাদাম পাউডার
প্রণালীঃ
সব উপকরণ একসঙ্গে ভালো করে মিশ্রণে ভরে নিন। একটি ঝাঁকিকে বা স্ট্যান্ড মার্কিনির সাহায্যে গুলিয়ে নিন।
মিশ্রণটি সাধারণ তাপে এনে বাচ্চাকে পরিবেশন করুন। ঠাণ্ডা বা হালকা গরম করে খান, পছন্দ অনুযায়ী।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url