ঘর সাজান স্বল্প খরচে – ১০টি সহজ ও সাশ্রয়ী আইডিয়া যা বদলে দেবে আপনার বাসার চেহারা
ঘর আমাদের সবচেয়ে কাছের জায়গা। দিনশেষে মানসিক শান্তি পেতে এই ঘরেই আসলে শান্তি খুঁজে থাকি। পরিবার সহ시간 কাটানোও খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেকের মনে হয়, সুন্দরভাবে ঘর সাজাতে বেশি টাকা প্রয়োজন। দামি আসবাব বা ডিজাইনার ডেকোররির প্রয়োজন হয়। কিন্তু এটা ঠিক নয়। আসলে, ঘর সাজানোর জন্য দরকার সৃজনশীলতা, রুচি, আর কিছু সাশ্রয়ী আইডিয়া।
এই গাইডে জানব কিভাবে কম খরচে, সহজে এবং মজাদারভাবে ঘর সাজানো যায়। পুরোনো জিনিস, স্থানীয় বাজার, বা নিজের হাতে তৈরি কিছু উপকরণ দিয়ে আপনি নিজেই হতে পারেন আপনার ঘরের ডিজাইনার!
চলুন শুরু করি ১০টি সাশ্রয়ী এবং কার্যকরী ঘর সাজানোর আইডিয়া, যা আপনার ঘরকে দেবে নতুন রূপ, এতে বড় খরচ হবে না! 🛋️🌟
পোস্ট সুচিপত্রঃ ঘর সাজান স্বল্প খরচে – ১০টি সহজ ও সাশ্রয়ী আইডিয়া যা বদলে দেবে আপনার বাসার চেহারা
- গাছপালা এবং ইনডোর প্ল্যান্ট – প্রাকৃতিক ছোঁয়ায় বাড়ান প্রাণশক্তি 🌱✨
- 🖼️পুরনো জিনিস দিয়ে ওয়াল ডেকর – কল্পনার স্পর্শে সৃজনশীলতা 🎨✨
- 🕯️আলো ও বাতির জাদু – উষ্ণতা ও স্টাইল একসাথে 💡✨
- 🧺স্টোরেজ আইডিয়া – গুছিয়ে রাখুন, সাজিয়ে রাখুন 🎒🧳
- 🧶হ্যান্ডমেড কুশন কভার ও পর্দা – ঘরে বসে সাজিয়ে নিন সুন্দরতা 🪡🪢🪟
- 🛒সাশ্রয়ী কেনাকাটা – লোকাল মার্কেট থেকে অনলাইনে 🛍️💸
- 🧼পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সাজের ভারসাম্য – উজ্জ্বলতা ধরে রাখুন🧽🧹✨
- 📸নিজের ঘর নিজের স্টাইল – ছবি তুলুন, অন্যদের অনুপ্রাণিত করুন 🏡✨📷
- ✍️লেখকের শেষ কথা🌿
🌿গাছপালা এবং ইনডোর প্ল্যান্ট – প্রাকৃতিক ছোঁয়ায় বাড়ান প্রাণশক্তি 🌱✨
ঘর সাজানোর সবচেয়ে সহজ, ক্ষতিকারক মুক্ত এবং সাশ্রয়ী উপায় হলো ইনডোর প্ল্যান্ট বা গৃহসজ্জার গাছ। এই সবুজ গাছগুলো ঘরের মধ্যে প্রকৃতির শান্তি এনে দেয়, বাতাসে অক্সিজেন বাড়ায় আর দেখতেও সুন্দর।
🍀 কেন ইনডোর প্ল্যান্ট ব্যবহার করবেন?
ঘরে গাছ রাখা কেবল বাড়ির সৌন্দর্যই বাড়ায় না, এর আরো অনেক ভাল দিকও আছে। যেমন:
✅ বাতাস শুদ্ধ করে (Air Purifier)
✅ মন সুস্থ রাখে, একাকীত্ব কমায়
✅ প্রাকৃতিক রঙ আর সৌন্দর্য যোগ করে
✅ ছোট জায়গাতেও বাড়তি আলো দেখায়
✅ খরচ কম, সহজে যত্ন নেওয়া যায়
বিশেষ করে শহরের অ্যাপার্টমেন্টে যেখানে প্রকৃতি বেশি দেখা যায় না, সেখানে এই ছোট ছোট গাছগুলো নিজেদের জন্য একটি প্রাকৃতিক পরিবেশ হয়ে ওঠে।
🌱 কোন ইনডোর প্ল্যান্ট বজায় রাখা ভালো?
ঘরের আলো, বাতাস আর যত্নের সময় অনুযায়ী আপনি নিচের গাছগুলোর যেকোনোটি নিতে পারেন:
মানি প্ল্যান্ট 💰
সহজে বাঁচে, পানিতে রাখতে পারেন। অনেকের কাছে সুখ-সমৃদ্ধির প্রতীক।
স্নেক প্ল্যান্ট 🐍 (Sansevieria)
কম আলোয় টিকে থাকে, রাতে অক্সিজেন দেয়, বেডরুমের জন্য খুব উপযুক্ত।
এরা হেড 🌿
ছোট পটে রাখা যায়, খুব কম যত্ন দরকার। পাতার রঙে দেখতেও সুন্দর।
অ্যাভোকাডো গাছ 🌵
ওষুধের মতো উপকারী, ত্বকের যত্নেও কাজে লাগে। সহজে বাড়ে, যত্নে টেকসই।
লাকি ব্যাম্বু 🎍
জলেই বাড়ে, সুন্দর দেখায়। ছোট জায়গায় রাখার জন্য একদম পারফেক্ট।
🪴 ঘরে কোথায় রাখবেন?
ঘরের প্রতিটি অংশে গাছ রাখলে সুন্দর দেখায়। যেমন:
বেডরুমে: ছোট মানি বা স্নেক প্ল্যান্ট ঘুমের পরিবেশ শান্ত করে।
ডাইনিং রুমে: একটি লাকি ব্যাম্বু বা ক্যাকটাস চমকদার লাগে।
বইয়ের তাক বা টিভি ইউনিটে: ছোট পটে এরা খুব সুন্দর লাগে।
বারান্দা বা জানালা পাশে: ঝুলন্ত বা লতানো গাছ, যেমন হ্যাংিং প্ল্যান্ট।
🛒 কোথা থেকে গাছ কিনবেন? কত খরচ?
সাধারণ নার্সারি থেকে ৫০-১০০ টাকায় ছোট গাছ পাওয়া যায়।
অথবা Daraz, Evaly বা Facebook Group থেকে অর্ডার করতে পারেন।
পুরনো বোতল, কাপ বা পাত্র দিয়ে সাজাতে পারেন রিইউজড টব। তাতে বাড়তি খরচ হবে না।
👉 গাছের যত্ন খুব বেশিদিন হয় না। একদিনে একবার জল দিন, মাঝে মাঝে রোদ দিন, এটাই কাজ।
🎨 নিজের হাতে “গাছের টব” বানান!
পুরনো মগ, প্লাস্টিক বোতল বা কাচের জার দিয়ে সাজান রঙিন, ইউনিক গাছের পাত্র। এতে খরচ কম হবে, ঘর হবে ব্যক্তিগত ও সৃজনশীল।
আরো পড়ুনঃ ডায়েট মেনে সুস্থ খাবার: ওজন কমাতে ঘরেই রান্না করুন এই ১০টি সহজ ও পুষ্টিকর রেসিপি
✨ লেখকের টিপস:
"সবুজ গাছে প্রাণ আছে। ইনডোর প্ল্যান্ট কেবল সাজই নয়, জীবনযাপনের অংশ। প্রতিদিন যত্ন নিলে, গাছ আপনাকে দেবে শান্তি, সুখ আর ভালোবাসা।"
🖼️পুরনো জিনিস দিয়ে ওয়াল ডেকর – কল্পনার স্পর্শে সৃজনশীলতা 🎨✨
ঘরের দেয়ালগুলো শুধু ইট বা পাথর নয়, বরং মনই সেখানে প্রতিফলিত হয়। একঘেয়ে সাদা দেয়ালকে জীবন্ত ও ব্যক্তিত্ববান্ধব করে তুলতে অনেক সময় ভাবি দামি পেইন্টিং বা আর্টওয়ার্কের উপর। কিন্তু জানলে আপনি অবাক হবেন, ঘর সাজানোর জন্য পুরনো বা অপ্রয়োজনীয় জিনিস ভীষণ কাজে আসে — খরচও খুব কম পড়ে!
এখানে দেখব কীভাবে পুরনো পত্রিকা, কাপড়, বোতল, ছবি, বক্স বা কাঠের টুকরো দিয়ে দেয়ালকে আরও সুন্দর করে তোলা যায়। একদম শিল্পকর্মের মতো লাগে।
📌 কেন পুরনো জিনিস দিয়ে সাজাবেন?
✅ খরচ প্রায় নেই বা খুবই কম
✅ পরিবেশের জন্য ভালো – পুনর্ব্যবহার (Recycle & Upcycle)
✅ এক চিলতে নিজস্বতা ও ইউনিক স্টাইল
✅ নিজের হাতে তৈরি, ফলে ‘পার্সানাল টাচ’ বেশি আসে
🎨 পুরনো জিনিস দিয়ে দেয়াল কেমন সাজান?
📷 পুরনো ছবি দিয়ে ফটো ওয়াল
পরিবারের পুরনো সাদা-কালো বা রঙিন ছবি, নিজের আঁকা বা শিশুর আঁকা ছবি। একটি দেয়ালে গ্রিড করে বা এলোমেলোভাবে ঝুলিয়ে দিন। টিপস: রঙিন সুতা বা দড়ি দিয়ে সুই করে পোলে ঝুলিয়ে দিন। চাইলে ফটো ফ্রেমও বানাতে পারেন পুরনো কার্ডবোর্ড দিয়ে।
📰 ম্যাগাজিন বা খবরের কাগজের কাটিং
পুরনো ম্যাগাজিনে থাকা প্রেরণাদায়ক কোড, পোস্টার বা ফ্যাশন ছবি। খুব সুন্দর ভাবে দেয়ালে সাজিয়ে ফেলুন। কাঁচি ও গ্লু দিয়ে তৈরি করুন ক্রিয়েটিভ কোলাজ বা ‘ক্রিয়েটিভ ওয়াল প্যানেল’ — একদম ডিজাইনারের কাজের মতো দেখাবে।
আরো পড়ুনঃ রান্না করা নিমের ছালের রস পান করলে কি হয় জানুন।
🧵 পুরনো কাপড় দিয়ে ওয়াল হ্যাংগিং
শাড়ি বা ওড়নার রঙিন টুকরো দিয়ে বানান ম্যাক্রামে স্টাইলের হ্যাংগিং। কাঠি বা বাঁশের সাথে বেঁধে দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখুন। পুরনো কাপড় দিয়ে তৈরি ফ্যাব্রিক ওয়াল আর্ট এখন ট্রেন্ড, সহজে ও সুন্দরভাবে বানানো যায়।
🧃 বোতল বা জার দিয়ে সুন্দর ঝুলন্ত আর্ট
রঙ করে বা রিবন দিয়ে সাজানো গ্লাসের বোতল বা প্লাস্টিকের জার দিয়ে ভিতরে ফুল ভরে ঝুলিয়ে দিন। চাইলে ছোট মানি প্ল্যান্টও লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা যায়।
📦 পুরনো কাঠ বা বক্স দিয়ে শেলফ
পুরনো কাঠ বা কার্টনকে রঙ করে সাজান। ছোট শোপিস, বই বা গাছ রাখার জন্য ঠিক এই শেলফ খুব আকর্ষণীয় দেখাবে।
💡 আরও কিছু ইনোভেটিভ আইডিয়া:
রঙিন সিডি ডিস্ক দিয়ে ঝকঝকে ডিজাইন। মোমবাতি বা লাইট ফিক্সার দিয়ে বোহেমিয়ান স্টাইল। রঙিন পেপার ফ্যান বা টিস্যু ফুল, যেগুলো আপনি নিজে তৈরি করতে পারেন। নিজের লেখা ক্যালиг্রাফি বা প্রিয় উক্তি ফ্রেমে সাজিয়ে রাখতে পারেন।
🧰 যেসব উপকরণ লাগবে:
গ্লু, স্কিচ টেপ, পিন, সেলোফেন, রঙ বা ব্রাশ, কালার পেন। সুঠোতা, কাঁচি, পিন, হ্যাঙ্গার—সবই দরকার। আর একটুকু সৃজনশীলতা ও ইচ্ছা।
✨ লেখকের পরামর্শ:
“সাজানো মানে ব্যয়ের প্রতিযোগিতা নয়। বরং আপনার ভালোবাসা, রুচি ও কল্পনার ছোয়ায় ঘর সাজানো হয়। পুরনো জিনিসের নতুন রূপ সবচেয়ে খরচ কম ও আত্মতৃপ্তির। নিজের হাতে বানানো ঘর শুধু ঘর নয়, একেকটা হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি।”
🕯️আলো ও বাতির জাদু – উষ্ণতা ও স্টাইল একসাথে 💡✨
একটা ঘর সুন্দর সাজানো হলেও যদি আলো না থাকে, তা একদম বোঝানো যায় না। আলো কেবল ঘরকে উজ্জ্বল করে না, বরং তার উষ্ণতা, ছায়া, সুন্দর টোন বা রঙ দিয়ে পুরো পরিবেশ বদলে দেয়। কম বাজেটেও ঘর সাজাতে চাইলে আলোকপাত করে তৈরি কিছু অর্থনৈতিক ও সৃজনশীল ধারণা শক্তিশালী অপশন হতে পারে।
এই অংশে জানব কিভাবে খুব বেশি খরচ না করে ঘরের মেজাজে আলোর জাদু আনতে হয়—দুইই যেন সুন্দর, উষ্ণ ও আরামদায়ক।
🔆 আলো ব্যবহারে কেন গুরুত্ব দেবেন?
✅ ঘরের পরিবেশে উষ্ণতা আর শান্তি আনে
✅ সঠিক আলো ঘরের সৌন্দর্য দ্বিগুণ করে দেয়
✅ ঘরের মুড বা আবহাওয়ায় প্রভাব ফেলে
✅ সৃজনশীল আলোর ডিজাইন ঘরটিকে করে তোলে ইউনিক
✅ কম খরচে, সহজে এবং বদলানো যায় বারবার
💡 কোন ধরনের আলো ব্যবহার করবেন?
ফেয়ারি লাইট ✨
ফেয়ারি লাইট ছোট ছোট আলো, লম্বা সুতোর মতো জোড়া থাকে। সেগুলো খুব সাশ্রয়ী, আর ব্যবহার করে ঘরে সুন্দর এক ঝলক এনে দেয়।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে AI টুল দিয়ে ছবি বানাবেন।
বেডরুমের বিছানার মাথা পিছনে
দেয়ালMedicineর ছবিগুলোর আশেপাশে
আয়নার পাশে
জানালার পর্দার ওপর
গাছ বা শোপিসের উপর মোড়া
ফেয়ারি লাইটের দাম সাধারণত ১০০-২০০ টাকার মধ্যে পড়ে, যা বারবার ব্যবহার করতে পারেন।
🕯️মোমবাতি ও ক্যান্ডেল হোল্ডার
মোমবাতির আলোর মধ্যে থাকে এক ধরনের রোমান্টিক ছোঁয়া। এখন বাজারে নানা ডিজাইনের ক্যান্ডেল হোল্ডার পাওয়া যায়—স্টিল, কাচ বা কাঠের।
ডাইনিং টেবিলে
বাথরুমের কোণে
বইয়ের তাকের পাশে
বেডের পাশে রাতে আসার সময়
আর চাইলে ঘরের মধ্যে নিজের হাতে বানানোও সম্ভব — কাচের জার, পুরনো কাপ বা বোতল দিয়ে।
🛋️টেবিল ল্যাম্প বা বেডসাইড লাইট
ছোট টেবিল বা বেডসাইড ল্যাম্প ঘরের মেজাজ একদম পরিবর্তন করে দেয়। এর আলো শান্ত এবং দেখতে ভালই লাগে।
পড়াশোনা, বিশ্রাম বা ঘুমের সময়ের জন্য একদম পারফেক্ট
খরচ ৩০০-৮০০ টাকার মধ্যে, লোকাল মার্কেট বা অনলাইনে পাওয়া যায়
পুরানো টেবিলের শেড রঙ করে নতুন করে সাজানো যায়।
🎨DIY ল্যাম্প শেড
নিজের হাতে বানানো ল্যাম্পশেড তে ঘরে সৃজনশীলতা যোগ হয়। সহজে রঙিন কাগজ, পুরনো ক্যালেন্ডার বা কাপড় দিয়ে বানানো যায়।
বাল্বের চারপাশে কাগজ বা কাপড় দিয়ে নতুন ডিজাইন করুন
এটা শুধু সাশ্রয়ী নয়, বরং আপনার নিজের ছোঁয়া দিয়ে অনন্য করে তুলবে।
🌈নিয়ন সাইন ও LED বার লাইট
আধুনিক সময়ে LED নিয়ন সাইন আর বার লাইট খুব জনপ্রিয়। “Love”, “Dream”, “Smile” লেখা এই লাইটগুলো ট্রেন্ডে থাকছে।
ছোট আয়তনের নিয়ন লাইটের দাম ২০০-৫০০ টাকার মধ্য্যে পড়ে
ঘরে একটি অপ্রত্যাশিত স্পট হিসেবে কাজ করে
বাচ্চাদের ঘর, স্টাডি কোণ বা ওয়াল ডেকরে সেটি বেশ মানায়।
🛒 কোথা থেকে কিনবেন?
লোকাল মার্কেট (চিনাবাজার, বসুন্ধরা, নিউমার্কেট): দাম সাশ্রয়ী, ডিজাইন ভ্যারাইটিতে ভরপুর
অনলাইন (Daraz, AjkerDeal, Facebook Page): হোম ডেলিভারিসহ সস্তা আলোর অপশন পাওয়া যায়
✨ লেখকের পরামর্শ:
“ঘর সাজানোর সেরা উপকরণ হল আলো। দামি আসবাবের দরকার নেই, একটু আলোর সরল ব্যবহারই আপনার ঘর করতে পারে সিনেমার সেটের মতো!”
স্মার্ট আলোর ব্যবহার আপনার ঘরকে করে তুলবে উজ্জ্বল, উষ্ণ, আকর্ষণীয় আর প্রাণবন্ত।
🧺স্টোরেজ আইডিয়া – গুছিয়ে রাখুন, সাজিয়ে রাখুন 🎒🧳
সুন্দর ঘর আলাদা কিছু হলেও, যদি জিনিসপত্র এলোমেলো থাকে, পুরো সাজটিই নষ্ট হয়ে যায়। অল্প কিছু জিনিস যদি ঠিকঠাক করে না রাখা হয়, তাহলে ঘর দেখায় যেন বিশৃঙ্খলা। তবে এই গুছানোর কাজটাকে যদি আমরা এক সুন্দর সাজের অংশ মনে করি, তাহলে স্টোরেজ নিজেই হয়ে উঠতে পারে ঘরের আকর্ষণের অন্যতম উপাদান। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই স্টোরেজ সিস্টেম বানাতে অনেক খরচ হয় না।
এই অংশে জানব কীভাবে কম খরচে স্মার্ট স্টোরেজ আইডিয়া দিয়ে ঘরকে সাজানো যায়, ও একই সাথে গুছিয়ে রাখা সম্ভব।
🧳 কেন স্টোরেজ জরুরি?
✅ ঘর থাকে স্নিগ্ধ ও শান্তিপূর্ণ
✅ সময় বাঁচে – প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে পাওয়া সহজ
✅ ছোট ঘরে জায়গা পুরোপুরি ব্যবহার হয়
✅ গুছানো ঘর মানে শান্ত ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ
✅ স্টোরেজ আর ডেকর একসাথে করলে ঘরের সৌন্দর্য বাড়ে দ্বিগুণ
🪟 ঘরের কোন কোন জায়গায় স্টোরেজ তৈরি করবেন?
বেডের নিচে
দেয়ালের ফাঁকা জায়গায়
জানালার পাশে
টেবিল কিংবা সোফার নিচে
দরজার পিছনে
কিচেন বা বারান্দার কোনায়
🧺 কিছু কার্যকর ও খরচ-সাশ্রয়ী স্টোরেজ আইডিয়া
🧺 কাঠের বা প্লাস্টিকের ঝুড়ি
– পুরনো বাজার বা বাসার ঝুড়ি কাজে লাগাতে পারেন
– শিশুদের খেলনা, পোশাক, চুলের এক্সেসরিজ বা চিঠিপত্রের জন্য পারফেক্ট
টিপস: এগুলো রঙ বা রিবন লাগিয়ে দারুণ ডেকর আইটেম বানিয়ে নিতে পারেন!
🧥 হ্যাংগিং ওয়াল অর্গানাইজার
– ফ্যাব্রিক বা প্লাস্টিকের তৈরী ওয়াল অর্গানাইজার খুব জনপ্রিয়
– দরজার পিছনে বা দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন মোবাইল চার্জার, চাবি, ব্রাশ বা জুয়েলারি
– জায়গা বাঁচায় আর দেখতে সুন্দরও হয়
🗃️ ড্রয়ার বা কার্টন বক্স রি-ডেকর
– পুরোনো জুতার বাক্স বা প্যাকেজিং প্যাক ব্যাবহার করে ড্রয়ার বানান
– এটি সুন্দর করে রঙিন করে নিন, দেখায় যেন ব্র্যান্ডের শেলফ
– ভেতরে রাখুন প্রয়োজনীয় ছোট জিনিসগুলো
📚 ওয়াল শেলফ বা ওপেন রেক
– দেয়ালে কাঠের পাটাতন বসিয়ে ওপেন শেলফ তৈরি করুন
– এতে বই, ছোট গাছ, শোপিস বা দরকারি জিনিস রাখতে পারেন
– সুন্দর দেখায় আর জায়গাও বাঁচায়
🛏️ ফার্নিচার নিচের ফাঁকা জায়গা
– বেড, সোফা বা টেবিলের নিচে ট্রে বা স্টোরেজ বাক্স রাখুন
– কম্বল, শীতের পোশাক, ব্যাগ বা অফ-সিজন জামাকাপড়
– কিছু দেখায় না, আবার সহজে ব্যবহার করাও যায়
🛒 কোথায় কিনবেন?
লোকাল মার্কেট (চাঁদনী চক, নিউ মার্কেট) – ৫০-৩০০ টাকায় অনেক অপশন পাবেন
অনলাইন (Daraz, AjkerDeal, Facebook স্টোরেজ আইটেম পেজ)
নিজের হাতে পুরোনো বাক্স বা ঝুড়ি আর ফ্যাব্রিক দিয়েও বানাতে পারেন
✨ লেখকের টিপস:
“স্টোরেজ শুধু জায়গা বাঁচায় না, এটা তৈরি করে চোখের জন্য এক শিল্প। গুছিয়ে সাজালে ঘর বদলে যায়। হয়ে উঠে শান্তির জায়গা।”
🧶হ্যান্ডমেড কুশন কভার ও পর্দা – ঘরে বসে সাজিয়ে নিন সুন্দরতা 🪡🪢🪟
ঘর সাজানোর সময় আমরা অনেক সময় ভুলে যাই যে, কুশন কভার এবং পর্দাই হলো ঘরের সব চেয়ে নরম, রঙিন এবং চোখের চোখে পড়ে এমন অংশ। একটু পরিবর্তন করলে পুরো ঘরের চেহারা বদলে যেতে পারে।。 আর এজন্য আপনি খুব সহজে বসে বসে তৈরি করতে পারেন। পুরনো কাপড় বা কম খরচের ফ্যাব্রিক দিয়েই হতে পারে সুন্দর সাজ।
এই লেখায় জানব কিভাবে আপনি নিজের হাতে ইউনিক কুশন কভার ও পর্দা বানিয়ে নিতে পারেন, যা আপনার ঘরে নিজস্ব মেজাজ যোগ করবে।
🎯 কেন হ্যান্ডমেড কুশন কভার ও পর্দা?
✅ নিজের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন করতে পারেন
✅ খরচ কম—পুরনো কাপড় দিয়েও তৈরি সম্ভব
✅ পরিবেশের উপযোগী এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য
✅ ঘরের পরিবেশ দ্রুত বদলে দিতে পারে
✅ নিজের হাতে তৈরি—আত্মবিশ্বাস বাড়ায়!
🧵 হ্যান্ডমেড কুশন কভার – আরাম আর শিল্পের সমন্বয় 🎨🛋️ কিভাবে তৈরি করবেন:
পুরনো শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ বা কুর্তির কাপড় সংগ্রহ করুন
কুশনের সাইজ অনুযায়ী কাপড় কেটে দুটি অংশ বানান
সেলাই করুন বা ফিতা দিয়ে ঝুলানোর জন্য বানান
চাইলে মাঝখানে একটা চেইন লাগান, যাতে সহজে ধোয়া যায়
ডিজাইন আইডিয়া:
প্যাচওয়ার্ক স্টাইল: বিভিন্ন কাপড়ে ছোট ছোট টুকরা সেলাই করে অন্যরকম লুক দিন
হাতের কাজ: সেলাই না জানলে সুতা দিয়ে রাফ ডিজাইন বা আলপনা আঁকুন
লেইস ও বোতাম: পুরনো জামার বোতাম বা লেইস ব্যবহার করে অনন্য স্টাইল
খরচ:
ঘরের পুরনো কাপড় হলে খরচ একদম শূন্য
নতুন কাপড় হলে প্রতি কুশন কভার ৫০ থেকে ১০০ টাকা খরচে সম্ভব
🪟 হ্যান্ডমেড পর্দা – আলো ঢুকুক, সুন্দর করে তুলুন নিজের ঘর 🌞🧶 কিভাবে বানাবেন:
দরজার বা জানালার মাপ অনুযায়ী কাপড় কেটে নিন
উপরের দিকে ফিতা বা লুপ সেলাই করে দিন
নিচের দিকে ঝুল বা ট্যাসেল লাগান, শোভা বাড়াতে
হালকা ছায়ানট কাপড় দিলে আলো সুন্দরভাবে প্রবাহিত হবে
সাধারণ ডিজাইন আইডিয়া:
ব্লক প্রিন্টিং: আলু দিয়ে নিজের ডিজাইন প্রিন্ট করুন ফুল, পাতা বা গাছের
টাই-ডাই: পুরনো সাদা কাপড়কে রঙিন করে তুলুন সহজে
ক্যালিগ্রাফি: নিজের প্রিয় উক্তি কাপড়ে লিখে পর্দায় দিন—ঘর একেবারেই পরিবর্তিত হবে!
খরচ: পুরনো পর্দা থাকলে খরচ হয় না
নতুন কাপড় কিনলে প্রতি পর্দা ১৫০-২৫০ টাকা ক Expenses করে তৈরি করা যায়
🛍️ প্রয়োজনীয় উপকরণ:
পুরনো বা নতুন কাপড়
সুই বা সেলাই মেশিন (যদি থাকে)
ফিতা, বোতাম, রং, ব্রাশ
কল্পনা আর সময়ের ব্যাপার 😍
🧵 কোথা থেকে শিখবেন?
ইউটিউব: "Craftastic", "BD Home Decor", "Sewing with Style"
ফেসবুক গ্রুপ: "হস্তশিল্পে হোম ডেকর", "Creative Bangladesh"
মা থেকে শিখে নিতে পারেন, যে কেউ!
✨ লেখকের টিপস:
“ঘর সাজানো শুধু বাহ্যিক বিষয় নয়, এটা আমাদের ভালোবাসার প্রতিফলন। নিজের হাতে বানানো পর্দা ও কুশন ঘরই নয়, মনও ভালো হয়ে যায়।”
🪞আয়নার ব্যবহার – ছোট ঘরকে বড় দেখানোর সহজ কৌশল ✨🪞
ঘর ছোট হলেও সুন্দর করে সাজালে সেটি বড় এবং প্রশান্তিময় দেখায়। এই কাজে সবচেয়ে কার্যকর টুল হলো আয়না। আয়না ঘরকে শুধু আলোকিত করে না, বরং অপটিক্যাল ইলিউশনের মাধ্যমে ছোট স্থানকে বড় করে তোলে। সঠিকভাবে আয়না রাখলে ছোট ফ্ল্যাট বা রুমেও অনুভব হয় মুক্তির স্পর্শ, প্রশস্ততা ও সৌন্দর্য।
এখানে জানানো হলো, কিভাবে আয়না ব্যবহার করে ছোট ঘরকে বড় দেখানো যায় সহজ, সাশ্রয়ী এবং দৃষ্টিনন্দন উপায়ে।
🪞 আয়নার গুরুত্ব ও উপকারিতা
✅ অপটিক্যালভাবে ঘরকে বড় দেখায়
✅ আলো প্রতিফলনের মাধ্যমে ঘরকে উজ্জ্বল করে
✅ ঘরের গভীর জায়গায় আলো ছড়িয়ে দেয়
✅ সুন্দর আয়না ঘরের স্টাইল বাড়ায়
✅ কম খরচে প্রফেশনাল ইন্টেরিয়র লুক তৈরি হয়
📌 কোথায় আয়না স্থাপন করলে সবচেয়ে বেশি কার্যকর?
🪞প্রবেশ মুখের কাছে (Entrance Wall):
দরজার পাশে আয়না থাকলে দেখা যায় ঘর প্রশস্ত। এটি দেখলে মনে হয় ঘর অনেক বড়। অনেকে মনে করেন, এতে বাড়িতে ইতিবাচক শক্তি প্রবেশ করে। ফ্রেমের জন্য ব্যবহার করতে পারেন উজ্জ্বল বা ধাতব ধাঁচের ডিজাইন।
🪞বেডরুমের এক পাশে:
বিছানার পাশে বড় আয়না লাগালে ঘর বড় মনে হয়। চাইলে এর পাশে লাইট লাগান – দেখাতে অসাধারণ লাগে। তবে খেয়াল রাখুন, ঘুমানোর সময় যেন আয়নার নিজের রেফ্লেকশন মুখে না পড়ে। অনেকের জন্য এটা অস্বস্তি তৈরি করে।
🪞ডাইনিং এরিয়ায়:
ডাইনিং টেবিলের পাশে আয়না লাগালে খাবার পরিবেশ আরো ভালো লাগে। এতে রেস্টুরেন্টের মতো পরিবেশ তৈরি হয়। খাবারের জায়গা আরও মনোমুগ্ধকর দেখায়।
🪞সিঁড়ির নিচে বা কোণে:
বাড়ির খালি জায়গায় বা যেখানে আলো কম, সেখানে আয়না রাখলে ইন্টেরিয়র আরো প্রফেশনাল দেখায়। চাইলে গাছ বা লাইটের প্রতিফলনও ব্যবহার করতে পারেন।
🪞 আয়নার ডিজাইন ও স্টাইল
ফুল-লেন্থ ডিজাইন: রুমে খাটের পাশে বা ড্রেসিং এরিয়ায় খুবই মানানসই।
সানবার্স্ট রাউন্ড: চারপাশে সূর্যরশ্মির মতো ডিজাইন, দেয়ালে দেন ক্লাসিক টাচ।
কলেজ স্টাইলের ছোট ছোট আয়না: একসাথে বসিয়ে দেয়ালে সুন্দর প্যাটার্ন তৈরি করুন।
অ্যান্টিক ফ্রেম: পুরনো ধাঁচের কাঠ বা ধাতুর ফ্রেম—রুচিশীলতা বাড়ায়।
💡 আয়না ব্যবহারের জন্য কিছু চমৎকার টিপস: আয়না এমন জায়গায় রাখুন যেখানে আলো পড়ে। জানালার বিপরীতে রাখলে বাইরের সবুজে প্রতিফলিত হবে।
আয়নার পাশে ফেয়ারি লাইট বা ল্যাম্প দিয়ে ঘরে একটা রোমাণ্টিক আবহ তৈরি করুন।
আয়নার নিচে ছোট টেবিল বা ফুলের পট দিয়ে দেখাতে সুন্দর লাগে।
🛍️ আয়না কোথা থেকে কিনবেন?
লোকাল গ্লাস দোকান: নিজের পছন্দমতো আকার ও ফ্রেম বানানো যায়।
অনলাইন (Daraz, Evaly): পছন্দের ডিজাইন সহজে অর্ডার করতে পারবেন।
ফার্নিচার দোকান: আয়না ও ড্রেসিং টেবিল একসঙ্গে পাওয়া যায়।
💸 মূল্য: ছোট আয়না ১৫০–৩০০ টাকা, মাঝারি ৫০০–৮০০ টাকা, বড় বা ডিজাইন আয়না ১০০০–১৫০০ টাকা মধ্যে।
✨ লেখকের টিপস:
“আয়না শুধু আপনার ছবি দেখায় না, এটি আপনার ঘরের স্বাচ্ছন্দ্য, রুচি ও সৌন্দর্যের প্রতিফলন। সঠিক জায়গায় আয়না রাখুন, আর দেখুন ঘর কেমন বদলে যায়।”
🛒সাশ্রয়ী কেনাকাটা – লোকাল মার্কেট থেকে অনলাইনে 🛍️💸
অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, দামী শপিং ছাড়া সুন্দর কিছু পাওয়া যায় না। তবে সত্যিটা হলো, কিছু বুঝে, জায়গা চিনে, প্রয়োজন অনুযায়ী কিনলে আপনি খুব কম খরচে দুর্দান্ত জিনিস সংগ্রহ করতে পারেন। এটা করতে পারেন লোকাল মার্কেট, ফেসবুক পেইজ বা জনপ্রিয় অনলাইন শপ থেকে।
এখানে আমরা জানব কিভাবে কম খরচে ঘর সাজানোর দরকারি জিনিসগুলো খুঁজে পাবেন, কোথায় ভালো ডিল পাওয়া যায়, আর অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোগুলো কিভাবে কাজে লাগাবেন।
🎯 কেন সাশ্রয়ী কেনাকাটা গুরুত্বপূর্ণ?
✅ বাজেটের মধ্যে সুন্দর ঘর তোলা যায়
✅ দর কষাকষি করে বেশি ভালো জিনিস পাওয়া সম্ভব
✅ লোকাল মার্কেটে পণ্য মানও খুব ভালো হতে পারে
✅ অনলাইনে অফার বা কুপন ব্যবহার করে বেশ ছাড় পাওয়া যায়
✅ এক জায়গা থেকে সব না কিনে আলাদা করে কেনা সাশ্রয়ী
🏪 লোকাল মার্কেট – গোপন রত্নের খেলা 💎
অবস্থান যেখানে যেতে পারবেন:
চাঁদনি চক, নীলক্ষেত (ঢাকা): কুশন কভার, পর্দা, আলো, শোপিস সবই কম দামে পাওয়া যায়।
বসুন্ধরা সিটি/নিউ মার্কেট: হোম ডেকর আর রুম সাজানোর অসংখ্য চয়েস।
টাউন হল, চিটাগাং ডিসি হিল, রাজশাহী কলেজ মার্কেট: গ্রামীণ হস্তশিল্প ও কাঠের জিনিসের খোঁজ।
সপ্তাহের হাট বা হকার বাজারের সামনে: অনেক সময় ৫০-১০০ টাকায় দুর্দান্ত জিনিস পাওয়া যায়।
খরচের তালিকা:
ফ্যাব্রিক – পর্দা, কুশন কভার, টেবিল রানার
ঝুড়ি, প্লাস্টিক স্টোরেজ, ল্যাম্প
গাছের টব, আয়না, ছোট শেলফ
ফিয়ারি লাইট, কাঠের ফ্রেম, ম্যাট
💡 টিপস: দাম বলুন, দর কষাকষি করুন। বিক্রেতারা ২০-৩০% ছাড় দেন সাধারণত।
📦 অনলাইন শপিং – মোবাইল বা কম্পিউটার দিয়ে ঘর সাজান 💻📱
জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম:
Daraz: হোম ডেকরের জন্য আলাদা বিভাগ, ৫০-৭০% ছাড় প্রায়ই।
Evaly, Pickaboo, PriyoShop: আলনা, LED লাইট, শেলফ সবই পাওয়া যায়।
Facebook পেজ বা গ্রুপ: “Home Decor BD”, “Interior Mania”, “BD Home Shopping” – এখানে রিচার্জেবল লাইট, DIY জিনিস, হস্তশিল্প যা যা।
অনলাইন কেনার সুবিধা:
সঙ্গে অনেক আইটেম দেখা যায়
কুপন, ভাউচার, অফার চালু থাকে
অর্ডার করে বসে থাকুন, হোম ডেলিভারি পাবেন
রিভিউ দেখে সিদ্ধান্ত নিন
💡 টিপস: COD বিকল্প থাকলে ভালো, বিক্রেতার রেটিং দেখুন।
🧾 বাজেট অনুযায়ী পরিকল্পনা করুন
✅ একটা বাজেট ঠিক করুন (মনে নিন – ২০০০ টাকা)
✅ কত টাকা কোথায় খরচ করবেন ঠিক করে নিন
✅ একবারে না কিনে ধাপে ধাপে সামগ্রী সংগ্রহ করুন
✅ আগে থাকা জিনিসগুলো দিয়ে নতুন কিছু বানানোর চেষ্টা করুন
🎁 সেল বা অফার কখন হয়?
ঈদ, পুজো, নিউ ইয়ারে বড় ছাড় পাওয়া যায়।
১১.১১, ১২.১২, ব্ল্যাক ফ্রাইডে (Daraz): ৩০%–৮০% ছাড় হয়।
Facebook লাইভ সেলেও অনেক দোকান কম দামে বিক্রি করে।
✨ লেখকের টিপস:
সাজানোর জন্য দামের উপর ভরসা নয়, কল্পনা আর কিছু কৌশল দরকার। লোকাল দোকান থেকে শুরু করে অনলাইনে, ঠিক পছন্দ করে নিজের স্বপ্নের ঘর গড়া যায়।
🧼পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সাজের ভারসাম্য – উজ্জ্বলতা ধরে রাখুন🧽🧹✨
ঘর সাজানো মানে শুধু পর্দা বা শোপিস বসানো নয়। সত্যিকার সুন্দরতা ও প্রাণবন্ততা জন্য দরকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সাজের সামঞ্জস্য। ঝকঝক ঘরে কুশনের রঙ উজ্জ্বল লাগবে, আনার চমকি নজর কাড়বে, আর দেয়ালের আর্ট সত্যি আসল সৌন্দর্য তুলে ধরবে। অনেকেই সুন্দর করে ঘর সাজিয়ে রাখেন, কিন্তু কিছুদিন গেলে তা ধুলোময় আর অগোছালো হয়ে পড়ে। ছোট ছোট অভ্যাসে ঘরের সৌন্দর্য সহজে বজায় রাখা যায়।
এখানে জানাব কি ভাবে নিয়মিত ও স্মার্ট পরিচ্ছন্নতায় ঘরের সাজ ও উজ্জ্বলতা রক্ষা করবেন—অতি সহজ কিছু কৌশলে।
🧼 পরিচ্ছন্নতা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
✅ সাজানো ঘরের সৌন্দর্য দীর্ঘদিন থাকে।
✅ ধুলা ও ময়লার ব্যাঘাত কমে যায়, স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
✅ অতিথিদের চোখে ঘরের সুন্দর ইমপ্রেশন পড়ে।
✅ মানসিক শান্তি ও মনোযোগ বাড়ে।
✅ প্রতিদিনের জীবন সুস্থ ও স্বচ্ছ হয়।
🧽 স্মার্ট পরিষ্কার রুটিন
প্রতিদিন ১০–১৫ মিনিট সময় দিন:
দিনশেষে ঘরের মেঝে ঝাড়ুনুড়ি করুন।
কুশন ও পর্দা ঝেড়ে ফেলুন।
দরজার পাশে জমে থাকা ধুলা পরিষ্কার করুন।
🕰️ একসাথে সব না করলেও চলবে, ধীরে ধীরে সেরে ফেলুন
সপ্তাহে একদিন গভীর পরিষ্কার করুন:
আয়না, ল্যাম্প, শেলফ, পেইন্টিং ও শোপিস মুছে ফেলুন।
বাথরুম ও রান্নাঘর ভালো করে পরিষ্কার করুন।
কুশন কভার ও পর্দা ধোয়ার পরিকল্পনা করুন।
🧴 ঘরে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন—বেকিং সোডা, ভিনেগার, লেবু ও ফিনাইল।
অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সরিয়ে দিন 🗑️।
ঘরে যত কম জিনিস থাকবে, তত কম ধুলা পড়ে।
পুরানো বই, পোড়া মোমবাতি বা খালি বাক্স ভেঙে ফেলুন।
রিসাইকেল করে নতুন করে সাজাতে পারেন।
ঘ্রাণ ধরে রাখুন 🌸।
এয়ার ফ্রেশনার, ধূপ বা লেমন ওয়াটার স্প্রে ব্যবহার করে ঘর টা সতেজ রাখুন।
নারকেল তেল আর লেবুর রসে ঘরোয়া কাঠের ফার্নিচার মিস্তিরি দিয়ে মেখে দিন—তাতে উজ্জ্বলতা ও সুন্দর গন্ধ হবে।
অন্য কিছু করতে চাইলে শুকনো ফুল, দারচিনি আর লেবুর খোসা দিয়ে ঘর সাজাতে পারেন।
শিশু বা পোষা প্রাণীর জন্য বিশেষ নজর 🐶👶।
শিশু বা পোষা থাকলে নিয়মিত লোয়ার ফ্লোর ক্লিনার দিন।
নরম খেলনা বা কুশন বারবার ধুয়ে রাখুন।
সব কিছু আলাদা জায়গায় রাখুন।
🛒 প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র:
ফিনাইল বা হারপিক, ডিসইনফেক্টেন্ট।
মাইক্রোফাইবার কাপড়।
ছোট ঝাড়ু, ব্রাশ, বালতি।
স্প্রে বোতল ও স্যান্ডালউড তেল।
সময় ও মন দিয়ে কাজ করুন 😉।
✨ লেখকের টিপস:
“সুন্দর ঘর শুধু চোখের জন্য নয়, মনকে শান্তিও দেয়। তাই যত বছর সাজগোজ থাকুক, নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুক বাড়ি।“
প্রিয় ঘরকে ভালোবাসলে শুধু সাজাবেন না, তার জন্য রোজ একটু যত্নও নিন—তাহলে সে হয় একটুখানি স্বর্গ। 🌿
📸নিজের ঘর নিজের স্টাইল – ছবি তুলুন, অন্যদের অনুপ্রাণিত করুন 🏡✨📷
আপনি যখন নিজের হাতে ঘর সাজান, তখন সেটি কেবল একটা জায়গা নয়। হয়তো কুশনের কভার নিজে বানিয়েছেন, দেয়ালে নিজের আঁকা ছবি ঝুলিয়েছেন বা পুরনো বোতল দিয়ে সুন্দর ফুলদানি তৈরি করেছেন। এগুলো শুধু ঘর নয়, গল্পের মতো। এই গল্প যখন ছবি করে শেয়ার করবেন, তখন আপনি গর্বিত হতে পারেন। এর পাশাপাশি অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবে।
এখানে আমি জানাব কিভাবে নিজের ঘরের ছবি তুলবেন, কীভাবে সেটি আকর্ষণীয় করবেন আর কোথায় শেয়ার করলে অন্যরা উপকৃত হবে।
📷 কেন ছবি তোলা ও শেয়ার করা দরকার?
✅ আপনার পরিশ্রম ও সৃজনশীলতা স্বীকৃতি পায়
✅ অন্যরা আপনার আইডিয়া দেখে অনুপ্রাণিত হয়
✅ সোশ্যাল মিডিয়া বা ব্লগে আপনার উপস্থিতি বাড়ে
✅ নিজের ঘরের পরিবর্তন ডকুমেন্ট হয়
✅ ভবিষ্যতে ইনকাম করার পথও খুলে যায় (যেমন: YouTube, Pinterest)
📱 কীভাবে সুন্দরভাবে ছবি তুলবেন?
🪟 আলো ঠিকভাবে ব্যবহার করুন
প্রাকৃতিক আলোয় ছবি তুলতে সবচেয়ে ভালো লাগে
সকাল ৯টা থেকে ১১টা আর বিকেল ৩টা থেকে ৫টা সময় সবচেয়ে উপযুক্ত
রাতে ছবি তোলার সময়, ল্যাম্প বা ফেয়ারি লাইট ব্যবহার করুন—নরম আলো create করতে পারে
🎯 ছবি ফ্রেম ও অ্যাঙ্গেল গুরুত্বপূর্ণ
সরাসরি সামনে না, একটু সাইডে ছবি তুলুন
আয়না, পর্দা, বালিশ, লাইট—সব যেন ফ্রেমে থাকে
শুটের আগে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলুন
🧼 পরিচ্ছন্ন থাকুন
ব্যাকগ্রাউন্ড পরিপাটি রাখতে হবে
মেঝে ঝকঝকে, কুশন ঠিকঠাক, দেয়াল পরিষ্কার—এসব ছোট বিষয় ছবির সৌন্দর্য বাড়ায়
🌐 কোথায় শেয়ার করবেন?
Facebook ও Instagram-এ নিজের একটি হোম ডেকর পেজ খুলুন
Pinterest-এ DIY বা ঘর সাজানোর ছবি দেখুন
YouTube-এ ভিডিও করে Before & After দেখাতে পারেন
Blog (tri4win.com)-এ নিজের ওয়েবসাইটে পোস্ট করতে পারেন
Facebook গ্রুপে শেয়ার দিন—“Home Decor BD,” “Interior Lovers,” “Creative Bangladesh” ইত্যাদি
🧡 এই অভাবনীয় প্রশংসা, আইডিয়া ও নতুন অনুপ্রেরণা পাবেন!
🧰 ছবিতে কি থাকতে পারে?
নিজের বানানো কুশনের কভার বা পর্দা
রঙিন ল্যাম্প বা ফেয়ারি লাইটের স্টাইল
বইয়ের তাক, শোপিস, গাছ, আয়না
ঘরের কোনে রাখার ডেকোরেটিভ ঝুড়ি বা টেবিল ম্যাট
বারান্দার গাছ বা নিজের হাতে সাজানো টব
💡 লেখকের উপদেশ:
“ঘর সাজানো শেষ নয়—এটা উদযাপন করুন। নিজের সৃষ্টিকে ক্যামেরায় বন্দি করে রাখুন, শেয়ার করুন, স্মৃতি ও অনুপ্রেরণার জন্য রেখে দিন।”
আপনার ঘর আপনার স্টাইল—অতএব, সেটি সবাইয়ের সামনে তুলে ধরতে কখনো দ্বিধা করবেন না। হয়তো আপনার একটা ছোট কৌশল অনেকে বড় অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে। 💖
✍️লেখকের শেষ কথা🌿
ঘর মানে শুধু চারগুলি দেয়াল নয়—এটা একটা অনুভবের দুনিয়া, আমাদের শান্তির ঠিকানা। সেই ঠিকানাকে একটু যত্নে সাজালে একটুখানি স্বর্গের মতো হয়। অনেকেই ভাবে, ঘর সাজানোর জন্য খুব বেশি টাকা দরকার, দামি আসবাবপত্র তো লাগবেই, ডিজাইনার দরকার। কিন্তু আজকের লেখাটা proves করে দিল—কল্পনা, সৃজনশীলতা আর কিছু সহজ টেকনিকের সাহায্যে ঘর একটা নতুন রূপ পেতে পারে।
আপনি চাইলে বসে খুব সহজেই পুরনো কাপড় দিয়ে বানাতে পারেন সুন্দর পর্দা, বাজারের সস্তা ঝুড়ি দিয়ে তৈরি করতে পারেন দারুণ স্টোরেজ। আবার ছোট ঘরকে বড় দেখাতে ক্লকিং আয়না বা সঠিকভাবে সেট করে খুবই সহজে। সবই খুব সাশ্রয়ী উপায়ে।
ঘর সাজানো আসলে শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, নিজের মনকে ভালো রাখার এক উপায়। তাই আজ থেকেই শুরু করুন—একটা কোণা, একটা দেয়াল, বা একটা ছোট কুশনের কভার দিয়ে। নিজের ঘর নিজের মতো করে সাজান। ছবি তুলে শেয়ার করুন। অনুপ্রেরণা দিন, এবং অন্যদেরও উৎসাহিত করুন।
আপনার ঘরই আপনার গল্প। তাই সেটা হোক সবচেয়ে সুন্দর। 🌈🏡💛
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url