স্মার্টফোনের গোপন সেটিংস, জানুন যেগুলো চালু করলে মিলবে দারুণ ডেটা সেভিং
অনেকে যখন স্মার্টফোনে ডেটা ব্যবহার করেন, তখন জানতে চান—ডেটা কেন এত দ্রুত শেষ হয়ে যায়। অনেক সময় এর পেছনে থাকা কিছু গোপন সেটিংস থাকে, যেগুলো আপনি জানেন না। এগুলোর কারণে অজান্তে আপনার ডেটা বেশ খানিকটা খরচ হয়ে যায়।
ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ করা অ্যাপস, অটো আপডেট এবং ক্লাউড ব্যাকআপের মতো ফিচার গুলো ঠিকঠাক না থাকলে ডেটার ব্যবহার অনেক বেশি হয়। আজকের এই আর্টিকেলে জানাবো কিছু সহজ সেটিংস যা চালু করলে ডেটা সহজেই বাঁচানো যায়। কি তাদের রেখে দিন, আর ডেটার খরচ কমান।
সুচিপত্রঃ স্মার্টফোনের গোপন সেটিংস: জানুন যেগুলো চালু করলে মিলবে দারুণ ডেটা সেভিং।
- 📵ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করুন: অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের ডেটা খরচ কমান
- ⚙️ডেটা সেভার মোড চালু করুন, এক ট্যাপে সেভিংস বাড়ান
- 🌐ব্রাউজার ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের লাইট ভার্সন ব্যবহার করুন
- 📥অটো-ডাউনলোড ও অটো-আপডেট বন্ধ করুন
- 📸Google Photos এবং ক্লাউড সিঙ্ক: কিভাবে ডেটা খরচ হয় জানুন
- 🎮গেমস ও ভিডিও অ্যাপের অজানা ডেটা চুরি বন্ধ করুন
- 📲অ্যাপ পারমিশন ও ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি নিয়ন্ত্রণ করুন
- 📡Wi-Fi Assist ও Network Switching বন্ধ করুন (iPhone ও কিছু Android ডিভাইস)
- 🔋 ব্যাটারি অপটিমাইজেশন মানে ডেটা ও চার্জ দুটোই সেভ করা
- 🔚লেখকের চূড়ান্ত কথা: সচেতন ডেটা ব্যবহারে কমবে আপনার মোবাইল বিল
📵ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করুন: অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের ডেটা খরচ কমান
স্মার্টফোনের সবচেয়ে বড় ডেটা পাচার হল ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা। যখন আপনি কোনও অ্যাপ ব্যবহার করছেন না, তখনও অনেক অ্যাপ পেছন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার 1করে যায় — আপনার জানা না থাকতেই। যেমন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইমেইল, গুগল ফটোস বা নিউজ অ্যাপগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে সার্ভারের সাথে যোগাযোগ করে, নতুন কনটেন্ট বা নোটিফিকেশন ডাউনলোড করে, এমনকি বিজ্ঞাপন আপডেটও নেয়। এর ফলে অনেক দ্রুত ডেটা শেষ হয়ে যায়।
🧐 ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা কিভাবে কাজ করে?
ধরা যাক, আপনি ইউটিউব অ্যাপ খুলছেন না, তবুও সেটি নতুন আপডেট বা বিজ্ঞাপন আনতে ডেটা খরচ করে। আবার, WhatsApp পেছনে থেকে মিডিয়া বা ব্যাকআপ চালিয়ে নেয়। এই সব কাজ যখন অটো হয়, তখন ডেটা অপ্রয়োজনীয়ভাবে খরচ হয়।
🔧 কিভাবে ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করবেন (Android):
১. Settings এ যান। ২. Network & Internet → Data Usage এ ক্লিক করেন। ৩. Mobile Data Usage দেখতে পাবেন। ৪. কোন অ্যাপে কত ডেটা খরচ হচ্ছে দেখবেন। ৫. দরকারি নয় এমন অ্যাপে ট্যাপ করে Background Data বন্ধ করুন।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে ফ্রি AI টুল দিয়ে ছবি বানাবেন (স্টেপ বাই স্টেপ)
💡 কিছু ফোনে সরাসরি অ্যাপ সেটিংস থেকে ও ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করা যায়।
🍎 iPhone এ কীভাবে করবেন:
১. Settings এ যান → Mobile Data। ২. নিচে স্ক্রল করে দেখুন কোন অ্যাপগুলো ডেটা ব্যবহার করছে। ৩. যারা দরকার নেই, তাদের পাশে থাকা সুইচ বন্ধ করে দিন।
অথবা, “Low Data Mode” চালু রাখুন: Settings → Cellular → Cellular Data Options → Low Data Mode।
✅ কোন অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করবেন?
সব অ্যাপে বন্ধ করলে সমস্যা হয় না। তবে এই অ্যাপগুলোতে বন্ধ করাই ভালো:
Facebook, Messenger
Instagram, TikTok
YouTube, Snapchat
Google Drive, Photos (যদি ক্লাউড ব্যাকআপ বন্ধ চান)
অপ্রয়োজনীয় গেম অ্যাপগুলোও বন্ধ রাখতে পারেন। তবে Gmail বা WhatsApp এর ক্ষেত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করলে নোটিফিকেশন আসতে একটু সময় লাগতে পারে। তাই সাবধানে করুন।
📊 কতটা ডেটা সাশ্রয় হবে?
গবেষণা বলছে, শুধু ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করলে আপনি ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ডেটা বাঁচাতে পারবেন। যারা দিনে ১ থেকে ২ জিবি ডেটা ব্যবহার করেন, তারা এই সেটিং চালু করে আরও অতিরিক্ত ১-২ জিবি ডেটা বাঁচাতে পারবেন।
📌 উপসংহার:
ডেটা যেন পানির মতো, অজান্তে ঝরে যায়। তাই সচেতন থাকতে হবে ও সঠিক সেটিংস ব্যবহার করতে হবে। এই সহজ পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করলে আপনার ডেটা নিরাপদ থাকবে আর খরচও কম হবে।
⚙️ডেটা সেভার মোড চালু করুন, এক ট্যাপে সেভিংস বাড়ান
স্মার্টফোনে ডেটা খরচ বাড়ার আরেকটি কারণ হলো অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের অজান্তে ইন্টারনেট ব্যবহার। যদি সহজে এই সমস্যা থেকে মুক্তি চান, তাহলে “Data Saver Mode” ব্যবহার করতে পারেন। এটি একটি বিল্ট-ইন ফিচার, যা একবার চালু করলে বেশিরভাগ অ্যাপের পেছনের ডেটা ব্যবহার বন্ধ করে দেয়।
🛠️ Data Saver Mode কিভাবে কাজ করে?
এটি চালু থাকলে:
অ্যাপগুলো পেছন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে না (কিছু কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া)
অটো আপডেট ও ক্লাউড ব্যাকআপ বন্ধ হয়ে যায়
ভিডিও ও ছবি লোড faster হয়, ডেটা কম খরচে
অনেক অ্যাপ তখন কম রেজুলেশনে কনটেন্ট দেখায়
অর্থাৎ, এটা আপনার ডেটার উপর একটি নিয়ন্ত্রণ রেখেছে, যেন অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ডেটা চুরি না করে।
📱 Android-এ কিভাবে চালু করবেন:
১. Settings > Network & Internet বা Connections এ যান
২. Data Usage বা Mobile Network অংশে প্রবেশ করুন
৩. “Data Saver” অপশন দেখুন
৪. সেটি অন করুন
অনেক সময় আপনি কিছু অ্যাপকে “Unrestricted” রাখার অপশনও পাবেন, যেমন WhatsApp বা Gmail, যাতে গুরুত্বপূর্ণ নোটিফিকেশন মিস না হয়।
আরো পড়ুনঃ ২০২৫ সালে ঘরে বসে ইনকামের পদ্ধতি।
🍏 iPhone-এ “Low Data Mode” কিভাবে চালু করবেন:
iPhone-এ Data Saver এর মত আলাদা অপশন নেই, তবে আছে Low Data Mode নামে একটি সমান ফিচার:
১. Settings > Mobile Data > Mobile Data Options > Low Data Mode → On
২. Wi-Fi চালু থাকলেও সেটি চালাতে পারেন:
Settings > Wi-Fi > Connected Wi-Fi > Low Data Mode → On
এটা চালু করলে iPhone নিজে করে:
অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ
ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ কমে
ভিডিও ও অন্যান্য স্ট্রিমিং কম ব্যান্ডউইথে চলে
📉 ডেটা সঞ্চয় কতটা সম্ভব?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, Data Saver Mode ব্যবহার করলে ২০-৫০% পর্যন্ত ডেটা বাঁচানো যায়। যা খুবই দরকারি তাদের জন্য যারা প্রতিদিন অনেক অ্যাপ চালান। এটি একটি সহজ সমাধান, যা খরচ কমাতে সাহায্য করে।
⚠️ সর্তকতা
কিছু অ্যাপ যেমন Google Maps, Gmail কিছু সময় অকার্যকর হতে পারে
নোটিফিকেশন দেরিতে আসতে পারে
ভিডিও মান কমে যেতে পারে
তবে আপনি চাইলে কিছু জরুরি অ্যাপের জন্য আলাদা পারমিশন দিয়ে রাখতে পারেন, যাতে তারা Data Saver Mode এর পরেও কাজ করে।
🌐ব্রাউজার ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের লাইট ভার্সন ব্যবহার করুন
আজকের দিনে সোশ্যাল মিডিয়া আর ওয়েব ব্রাউজিং আমাদের স্মার্টফোনের বড় ভাগ নিয়ে নেয়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, গুগল, ব্রাউজার—এসব অ্যাপ খুব বেশি ডেটা খরচ করে, বিশেষ করে যখন এগুলোর ফুল ভার্সন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কি জানেন, এসব অ্যাপের “লাইট ভার্সন” বা হালকা সংস্করণ ব্যবহার করলে কম ডেটায় একই কাজ সম্ভব? 😮
🧾 লাইট ভার্সন কি?
লাইট ভার্সন মানে ধোয়া-মোছা ছাড়াই ছোট আকারের অ্যাপ, যা কম র্যাম, কম স্টোরেজ লাগে এবং একেবারেই সীমিত ইন্টারনেট ব্যবহার করে। মূল অ্যাপের থেকে এগুলো:
আরো পড়ুনঃ AI বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
আকারে ছোট (৩–১০ MB)
কম ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা খরচ করে
কম গ্রাফিক্স আর ফিচার, তবে মূল কাজের জন্য যথেষ্ট
📱 জনপ্রিয় কিছু লাইট অ্যাপ:
১. Facebook Lite: ১০ MB কম, ডেটা কম খরচ, দ্রুত চলে
২. Messenger Lite: চ্যাট, ভয়েস কল যেমন তেমন, ভিডিও বা স্টোরি চলে না
৩. Google Go: দ্রুত লোড হয়, অডিও সার্চ ও দেয়
৪. YouTube Go (আগে ছিল): ভিডিও ডাউনলোড করে দেখা যায়, ডেটা খুব সাশ্রয়ী (এখন বন্ধ হলেও অনেকের ফোনে আছে)
৫. Opera Mini: ওয়েব ব্রাউজার, পেজ কমপ্রেস করে দেখায়, ৯০% ডেটা সঞ্চয়
🌟 কেন লাইট ভার্সন বেছে নেবেন?
ব্যাকগ্রাউন্ডে কম চলে
অটোমেটিক রেজুলুশন কমে যায় ভিডিও ও ছবির
বিজ্ঞাপন বা অটো-লোড কনটেন্ট কম দেখায়
স্লো নেটওয়ার্কেও ভালো চলে
কম র্যাম আর স্টোরেজ লাগে, ফোনও দ্রুত থাকে
🛠️ কোথায় পাবেন?
Google Play বা App Store-এ গিয়ে “Lite” লিখে সার্চ দিলেই পেয়ে যাবেন। উদাহরণস্বরূপ: “Facebook Lite”, “Messenger Lite”, “Google Go”।
🔁 তুলনামূলক তথ্য:
অ্যাপ বড় সাইজ ছোট সাইজ ডেটা খরচ কমায়
Facebook ৬০+ MB ২-৫ MB ৪০-৫০%
Messenger ৪০+ MB ১০ MB ৪৫%
Opera ১০০+ MB ২০ MB ৭০%
⚠️ কিছু সীমাবদ্ধতা:
কিছু ফিচার এড়িয়ে যেতে হয় যেগুলো অনেকের প্রয়োজন হয় (যেমন Reels, Stickers)
আকার কম থাকায় কিছুকিছু দেখতে অনেকের জন্য ধুসর হতে পারে
কখনো কখনো বাগ থাকতে পারে
তবে ডেটা সঞ্চয়ের জন্য এই ক্ষতি মানানসই হলে বড় কিছু নয়
📌 উপসংহার:
স্মার্টফোনে ডেটা বাঁচানোর জন্য শুধু সেটিং বদলালেই হবে না, একসঙ্গে অ্যাপের উপায়ও ঠিক করতে হবে। লাইট ভার্সন ব্যবহার করে আপনি প্রতিদিনের ডেটা খরচ কমাতে পারবেন, ফোনের গতি রাখবে স্লো না হয়ে, ব্যাটারিও বেশি ক্ষয় হবে না।
📥অটো-ডাউনলোড ও অটো-আপডেট বন্ধ করুন
আজকাল বেশিরভাগ অ্যাপই নিজেরাই নিজেকে আপডেট করে বা মিডিয়া ডাউনলোড করে ফেলছে। আপনি যদি লক্ষ্য করে থাকেন, হঠাৎ করে ডেটা কম হচ্ছে অথচ আপনি কিছু দেখছেন না, হাঁটুর পর বুঝবেন—অটো ডাউনলোড ও অটো আপডেট এই ফিচারগুলো ডেটা গোপনে খরচ করছে! 😱
এই ফিচারগুলো চালু থাকলে:
অ্যাপগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেদের আপডেট করে
WhatsApp বা Telegram এর মতো অ্যাপে মিডিয়া (ছবি, অডিও, ভিডিও) নিজেরাই ডাউনলোড হয়
Play Store বা App Store থেকে বিনা অনুমতিতে অ্যাপ ডাউনলোড হয়
এই অপশনগুলো বন্ধ না করলে প্রতিদিনই কিছু শত এমবি বা এমনকি ১-২ জিবি ডেটা শেষ হয়ে যেতে পারে!
⚙️ Google Play Store-এ অটো-আপডেট বন্ধ করার নিয়ম (Android):
- প্লেস্টোর খুলুন
- প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন, তারপর Settings এ যান
- Network preferences > Auto-update apps চাপুন
- “Don’t auto-update apps” অপশন সিলেক্ট করুন
👉 চাইলে শুধু Wi-Fi এর জন্য সেট করে রাখতে পারেন:
“Auto-update apps over Wi-Fi only”
🍏 iPhone-এ অটো-আপডেট বন্ধের নিয়ম:
- Settings > App Store
- “App Updates” ও “Automatic Downloads” বন্ধ করুন
- “Cellular Data” এর নিচে Automatic Downloads বন্ধ রাখুন
অর্থাৎ, iPhone এখন শুধু Wi-Fi থাকলে অ্যাপ আপডেট করবে।
📸 WhatsApp ও Telegram-এ অটো ডাউনলোড বন্ধ করুন:
WhatsApp:
- Settings > Storage and Data
- “Media auto-download” এ যান
- “When using mobile data”, “When connected on Wi-Fi”, “When roaming” — সব মিডিয়া টাইপ আনচেক করুন
Telegram:
- Settings > Data and Storage
- Automatic Media Download অপশন খুঁজে নিন
- “Mobile Data”, “Wi-Fi”, “Roaming” — এই তিনটিতেই অপ্রয়োজনীয় সব বন্ধ করুন
🎮 গেম অ্যাপে অটো আপডেট বন্ধ করুন:
অনেক গেম যেমন Free Fire, PUBG বা Asphalt মাঝে মাঝে নিজেরাই নতুন ফাইল ডাউনলোড করে। সেটি বন্ধ করতে:
গেমের ইন-অ্যাপ সেটিংসে যান
“Auto-Update”, “Download assets automatically” বা এরকম অপশন বন্ধ করুন
শুধু Wi-Fi তে ডাউনলোডের সেটিং করুন
📉 এই ফিচারগুলো বন্ধ রাখলে কতটা ডেটা প্রতি মাসে সংরক্ষণ হয়?
প্রতিদিন সাধারণত ২০০ থেকে ৫০০ এমবি ডেটা এই ফিচারগুলো খরচ করে। আপনি যদি বেশি অ্যাপ ব্যবহার করেন, সেটা ১ থেকে ২ জিবি পর্যন্ত হতে পারে। ফলে, এই ছোট সেটিংসগুলো দিয়ে মাসে ৫ থেকে ১৫ জিবি ডেটা বাঁচানো সম্ভব।
আরো পড়ুনঃ জিমেইল ছাড়া ফাইভারে একাউন্ট খোলা যাবে যেভাবা।
⚠️ সতর্কতা:
অ্যান অ্যাপ ম্যানুয়ালি আপডেট করাটা ভালো।
WhatsApp এ গুরুত্বপূর্ণ ফাইল মিস হতে পারে, তবে আপনি চাইলে Wi-Fi চালু রাখতে পারেন।
📌 শেষ কথা:
ডেটা কমাতে শুধু দেখার জন্য নয়, কাজেও কৌশলী হতে হবে। অটো ডাউনলোড ও আপডেট বন্ধ থাকলে ডেটা, ব্যাটারি, স্টোরেজ আর ফোনের স্পিড—allই ভালো থাকবে। এখনই চেক করে দেখুন আপনার ফোনে এই অপশনগুলো চালু না থাকলে। 🔍📲
📸Google Photos এবং ক্লাউড সিঙ্ক: কিভাবে ডেটা খরচ হয় জানুন
আজকাল আমাদের ফোনে ছবি ও ভিডিও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হয়ে গেছে। তাই ফটো ব্যাকআপ ও ক্লাউড সিঙ্কিং অন্যরকম ডেটা খরচ করে। বিশেষ করে Google Photos, iCloud, OneDrive, Dropbox যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডেটা ব্যবহার করে চলে।
☁️ ক্লাউড সিঙ্ক কি?
ক্লাউড সিঙ্ক মানে আপনার ফোনের ফাইলগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্য সার্ভারে রাখা। এতে সুবিধা হলো, ফোনে হারানো বা ভেঙে গেলে ছবি ও ভিডিও নিরাপদ থাকে। আর অন্য ডিভাইস থেকে দেখাও সহজ।
কিন্তু এই সুবিধার সাথে ডেটা খরচের সমস্যা থাকে। যখনই নতুন ছবি নেবে বা কিছু পরিবর্তন হবে, তখন অটোমেটিক আপলোড শুরু হয়।
📊 কোথায় বেশি ডেটা খরচ হয়?
নতুন ছবি বা ভিডিও আপলোডে
উচ্চ রেজোলিউশনের ভিডিও ব্যাকআপে
ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা সিঙ্ক প্রক্রিয়ায়
অডিও বা অন্য মিডিয়া ফাইল আপলোডে
ক্লাউড থেকে ছবি ডাউনলোডে
এসব কাজ ডেটা ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে, যা দ্রুত আপনার ডেটা প্যাক শেষ করে দিতে পারে।
⚙️ Google Photos-এ ডেটা সঞ্চয় করার উপায়:
১. Wi-Fi ছাড়াই আপলোড বন্ধ করুন:
Google Photos ওপেন করুন
সেটিংস → Backup & sync-এ যান
“Use cellular data to back up photos/videos” অপশন বন্ধ করুন অর্থাৎ, ছবি ও ভিডিও কেবল Wi-Fi তে ব্যাকআপ হবে, মোবাইল ডেটায় নয়।
২. ব্যাকআপ রেজোলিউশন কমান:
Google Photos-এ “High Quality” (এখন “Storage saver”) অপশন নির্বাচন করুন, যা ছবি ও ভিডিও কম সাইজে রাখে।
৩. অপ্রয়োজনীয় ছবি বাদ দিন:
নির্দিষ্ট ফোল্ডার বা আলবাম ব্যাকআপ থেকে বাদ দিন, যেমন স্ক্রিনশট বা WhatsApp ছবি।
ম্যানুয়ালি ব্যাকআপ করুন:
অটোমেটিক ব্যাকআপ বন্ধ করে, অপ্রয়োজন হলে Wi-Fi সংযোগে ছবি আপলোড করুন।
🍏 iCloud ব্যাকআপে সতর্কতা:
iCloud সেটিংসে গিয়ে Use Cellular Data বন্ধ করুন
অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের iCloud ব্যাকআপ বন্ধ করুন
💡 অন্য ক্লাউড সার্ভিসেও একই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়: Dropbox, OneDrive, Mega-তেও ডেটা খরচ কমানোর অপশন থাকে; এগুলো চালু রাখা জরুরি।
📉 কতটা ডেটা সঞ্চয় সম্ভব?
Google Photos-এ Wi-Fi ছাড়া ব্যাকআপ বন্ধ করলে মাসে ২ থেকে ৫ জিবি ডেটা খরচ কমানো যায়। আর রেজোলিউশনের মান কমালে ডেটার ব্যবহার ৩০-৪০% পর্যন্ত কমবে।
📌 সারসংক্ষেপ:
ক্লাউড সিঙ্ক সুবিধা অনেক, কিন্তু ডেটা সঞ্চয় করতে সচেতন থাকতে হয়। Wi-Fi ছাড়া ব্যাকআপ বন্ধ রাখা এবং রেজোলিউশনে কম করে ব্যাকআপ নেয়া সহজ ও কার্যকরী পদক্ষেপ।
🎮গেমস ও ভিডিও অ্যাপের অজানা ডেটা চুরি বন্ধ করুন
স্মার্টফোনের গেমস আর ভিডিও অ্যাপগুলো খুব মজার, কিন্তু এগুলো অজান্তেই আপনার মোবাইল ডেটা বড় রকম চুরি করে নিতে পারে। Free Fire, PUBG, Asphalt, Netflix, YouTube – এসব অ্যাপ ভিডিও, ইন-অ্যাপ অ্যাড, ডাউনলোড ও অটো স্ট্রিম চালু রাখে। এতে ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা গেম বা ভিডিও থাম্বনেইল, অটোপ্রোপ্রে লোড ফিচারগুলো অনেক ডেটা খরচ করে। তাহলে চলুন দেখি, কীভাবে এই ডেটা চুরি বন্ধ করবেন:
প্রথমত, শুধু Wi-Fi মোড চালু রাখুন। বেশিরভাগ জনপ্রিয় গেম—যেমন Free Fire, PUBG, Asphalt—এই অপশন সমর্থন করে। গেমের Settings এ যান। Download Assets বা Auto-update অপশনে গিয়ে Wi-Fi only সিলেক্ট করুন। যদি Background Downloads দেখেন, সেটিও Wi-Fi only করুন। ভিডিও অ্যাপের জন্য YouTube, Netflix, Amazon Prime Video ও Disney+ Hotstar-এ Data Saver বা Wi-Fi only চালু করুন। সেটিংসে গিয়ে ভিডিও কোয়ালিটি কমিয়ে Low বা Medium নির্বাচন করুন, এতে ডেটা কম খরচ হবে।
দ্বিতীয়ত, অটো-প্রলোড বন্ধ করুন। YouTube-এ Settings → Background & Downloads → Pre-load videos on Wi-Fi only চালু করুন। Autoplay next video বন্ধ করুন। Netflix-এ Data Usage বা Cellular Data সেটিংস কনফিগার করে ডেটা সীমা ঠিক করুন।
তৃতীয়ত, ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করুন। গেম বা ভিডিও অ্যাপের Settings-এ গিয়ে Mobile data বা Background data বন্ধ করুন। আইফোনে Settings→General→Background App Refresh বন্ধ করুন। Cellular Data বন্ধ করতে সেটিংস→Cellular → অ্যাপের পাশে বন্ধ দিন।
চতুর্থত, ইন-অ্যাপ ডেটা লিমিট বা অ্যালার্ট সেট করুন। PUBG Mobile এর জন্য Settings→Basic→Data Usage যান। YouTube-এ Data Usage → Restrict mobile data চালু করে ডেটা বাঁচান। এতে HD স্ট্রিম বন্ধ হবে।
পঞ্চমত, গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপের জন্য ডেটা Unrestricted রাখুন। WhatsApp, Gmail এর মতো অ্যাপের জন্য তেমনটাই করুন। Android-এ Data Saver→Unrestricted Data Access বা iPhone-এ Low Data Mode চালু রাখুন। এতে জরুরি নোটিফিকেশন আসবে। বিশেষ কোনো অ্যাপে ব্যতিক্রম করলে সুবিধা হয়।
ষষ্ঠত, ইন-অ্যাপ অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করুন। কিছু ভিডিও বা গেম অটো অ্যাড দেখায় ডেটা খরচ হয়। Brave Browser বা Firefox Focus দিয়ে ওয়েব গেম খেলুন। অ্যাডগার্ড বা ব্লোকাড ইনস্টল করলে ডাটা কম লাগবে।
সপ্তমত, নিয়মিত ডেটা মনিটর ও অ্যালার্ট সেট করুন। Android-এ Settings→Network & Internet→Data Usage→Data warning & limit করে নোটিফিকেশন চালু করুন। iPhone-এ Settings→Cellular→System Services→Data Usage দেখে নিন কিসের যত বেশি ব্যবহৃতি হচ্ছে।
উপসংহারে, “Only Wi-Fi” মোড, ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা রেস্ট্রিকশন, ডেটা লিমিট বা অ্যালার্ট ও অটো-প্রলোড বন্ধ করে ডেটা সঞ্চয় সম্ভব। এই উপায়গুলো অনুসরণ করলে মাসে ২ থেকে ৫ জিবি ডেটা বাঁচানো যায়। এখনই এই সেটিংসগুলো চালু করুন আর অপ্রয়োজনীয় ডেটা বিল থেকে মুক্তি পান! 📶✨
📲অ্যাপ পারমিশন ও ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি নিয়ন্ত্রণ করুন
প্রতিটি অ্যাপ আপনার ফোনে কিছু নির্দিষ্ট অনুমতি চাই—যেমন ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, লোকেশন, বা ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা। তবে এর মানে নয় যে এই অনুমতিগুলি শুধু তখনই ব্যবহার হবে যখন আপনি চান। অনেক অ্যাপ শুধু ব্যাকগ্রাউন্ডে ডেটা ব্যবহার করে, নোটিফিকেশন দেয়, লোকেশন ট্র্যাক করে অথবা সেন্সর ডেটা সার্ভারে পাঠায়। এতে করে অপ্রয়োজনীয় ডেটা খরচ হয়।
নীচে ধাপে ধাপে দেখানো হচ্ছে কিভাবে অনুমতি আর ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি বন্ধ করলে ডেটা সাশ্রয় হবে, ফোন নিরাপদ থাকবে আর পারফরম্যান্সও উন্নত হবে।
১. অনুমতি বন্ধ বা রিভিউ করুন (অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোন উভয়েই) অ্যান্ড্রয়েড
Settings → Apps → [অ্যাপের নাম] → Permissions
এখানে সব অনুমতি দেখুন, যেমন লোকেশন, ক্যামেরা, স্টোরেজ। অপ্রয়োজনীয় অনুমতি বন্ধ করুন। Settings → Privacy → Permission manager ব্যবহার করে সব অ্যাপের অনুমতিগুলো একবার দেখে নিন।
আইফোন
Settings → Privacy & Security
প্রতিটি বিভাগে যেমন Location Services, Photos, Microphone, Camera ট্যাপ করে দেখুন কোন অ্যাপ কি অনুমতি নিয়েছে।
"While Using the App" বা "Ask Next Time" নির্বাচন করুন। "Always" অনুমতি বন্ধ রাখুন।
💡 উদাহরণ:
লোকেশন: শুধুমাত্র Maps বা Delivery অ্যাপে “While Using” রাখুন।
ক্যামেরা/মাইক্রোফোন: ভিডিও কল ছাড়া অন্য সময় বন্ধ রাখুন।
২. ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি বন্ধ করুন
অনেক অ্যাপ আছে যেখানে “Background App Refresh” বা “Allow background activity” চালু থাকলে ডেটা খরচ হয়। আপনি এটি বন্ধ করলে ডেটা বাঁচবে।
অ্যান্ড্রয়েড
Settings → Apps → [অ্যাপের নাম] → Mobile data & Wi-Fi → Background data বন্ধ করুন।
Settings → Network & Internet → Data Saver → Unrestricted data access এ গিয়ে প্রয়োজনীয় অ্যাপ ছাড়া সব বন্ধ করুন।
আইফোন
Settings → General → Background App Refresh → পুরোপুরি বন্ধ করে দিন বা Wi-Fi-only করুন।
Settings → Cellular → অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের ডেটা বন্ধ করুন।
🔍 মনে রাখুন, ব্যাকগ্রাউন্ডে স্টাফ বন্ধ করলে নোটিফিকেশন বা লাইভ আপডেট বিলম্ব হতে পারে, তবে ডেটা অনেক খরচা বন্ধ হবে।
৩. অ্যাপ অনুযায়ী ডেটা নিয়ন্ত্রণ করুন
সোশ্যাল মিডিয়া: Facebook, Instagram → Settings → Account → Cellular Data Use → "Use Less Mobile Data" চালু করুন।
মেসেজিং: WhatsApp বা Telegram → Media Auto-Download বন্ধ করুন। সেটিংস → Storage & Data।
নিউজ অ্যাপস: অটো-রিফ্রেশ বা অটো-অপডেট বন্ধ করুন।
✏️ টিপস:
শুধুমাত্র Wi-Fi চালু করুন যেখানে অপশন আছে।
Push নোটিফিকেশনের ফ্রিকোয়েন্সি কমান।
৪. ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং ও ফোকাস মোড (অ্যান্ড্রয়েড)
অ্যাপ ব্যবহারে বা ব্যাটারি ও ডেটা কনজাম্পশন দেখার জন্য Digital Wellbeing অ্যাপটি ব্যবহার করুন।
Dashboard → App usage → Data usage দেখুন।
Focus Mode → নির্দিষ্ট অ্যাপগুলোকে ব্যাকগ্রাউন্ডে নিষ্ক্রিয় করুন।
৫. Low Data Mode (আইফোন)
iOS-এ Low Data Mode চালু করলে সব অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ হয়।
Settings → Cellular → Cellular Data Options → Low Data Mode
Settings → Wi-Fi → আপনার নেটওয়ার্কে → Low Data Mode
৬. নিয়মিত মনিটর ও অ্যালার্ট সেট করুন
অ্যান্ড্রয়েড
Settings → Network & Internet → Data Usage → Data warning & limit → দিন বা সপ্তাহে ডেটার লিমিট সরান।
আইফোন
Settings → Cellular → ডেটা ব্যাবহারের শেষ বিকল্পে নজর দিন।
অপ্রয়োজনীয় অ্যালার্ট চালু করুন।
উপসংহার
অ্যাপের অনুমতি ও ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি নিয়ন্ত্রণ করে আপনার মোবাইল ডেটা প্রায় ২০-৩০% কমানো যায়। এতে ব্যাটারিও বেশ টেকসই হয়, ফোন দ্রুত চলে ও গোপনীয়তা আরও শক্তিশালী হয়। আজই রিভিউ করে দেখুন, ব্যাকগ্রাউন্ড বন্ধ করুন এবং আপনার ডেটা ও ফোনের পারফরম্যান্স উন্নত করুন।
📡Wi-Fi Assist ও Network Switching বন্ধ করুন (iPhone ও কিছু Android ডিভাইস)
অফিসে বা বাসায় যখন দুর্বল Wi-Fi সিগন্যাল থাকে, তখন দেখবেন আপনার ফোন হঠাৎ করে 4G বা 5G এ স্যুইচ করে নেয়। এর জন্য দায়ী Wi-Fi Assist (iPhone) বা Smart Network Switch (Android) নামে অটো-চালক ফিচার। এই ফিচারগুলো বুঝে নিলে কম সিগন্যালে মোবাইল ডেটা ব্যবহার করে। এতে করে আপনার ডেটা দ্রুত শেষ হয়ে যেতে পারে, যা অপ্রয়োজনীয়। তাই এই ফিচারগুলো বন্ধ করে রাখা জরুরি, বিশেষ করে ডেটার সীমা থাকলে।
🔍 Wi-Fi Assist ও Smart Network Switch কী?
Wi-Fi Assist (iPhone): যখন Wi-Fi দুর্বল মনে হয়, তখন এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে Cell Data চালু করে দেয়। ফলে YouTube, ইমেল, ওয়েব ব্রাউজিং নিয়মিত চলে।
Smart Network Switch (Android): একইভাবে, দুর্বল Wi-Fi হলে ফোন অটোমেটিক মোবাইল ডেটায় চলে যায়। এতে ইন্টারনেট বন্ধ হয় না।
অত্যন্ত সুবিধাজনক এই ফিচারগুলো, তবে সীমিত ডেটা থাকলে বা ডেটা বাজেটের জন্য বন্ধ রাখা ভালো।
🍏 iPhone-এ Wi-Fi Assist বন্ধের পদ্ধতি
Settings এ প্রবেশ করুন।
Cellular বা Mobile Data অপশনটি নির্বাচন করুন।
নিচে স্ক্রল করে Wi-Fi Assist খুঁজে পান।
সেখানে থাকা সুইচটি Off করে দিন।
নোট: iOS 15+ এ “Wi-Fi Assist” অদৃশ্য হতে পারে, তবে “Automatic Switching to Cellular Data” বলা হতে পারে। যেখানে দেখবেন, সেখানে Off করুন।
🤖 Android-এ Smart Network Switch বন্ধের উপায়
বিভিন্ন ব্র্যান্ডে একে আলাদা নামে ডাকা হয়। তবে সাধারণ ধাপগুলো হলো:
Settings → Connections বা Network & Internet।
Wi-Fi নির্বাচন করে, সংযুক্ত নেটওয়ার্কের পাশে থাকা Settings (⚙️) আইকনে ক্লিক করুন।
Advanced বা অতিরিক্ত সেটিংসে যান।
“Smart network switch”, “Switch to mobile data” বা “Adaptive Wi-Fi” অপশনটি খুঁজে পেয়ে Off করে দিন।
সামসাং:
Settings → Connections → Wi-Fi → Advanced → “Switch to mobile data” বন্ধ করুন।
শাওমি (MIUI):
Settings → Wi-Fi → Wi-Fi Settings → “Smart network switch” বা “Auto-switch network” বন্ধ করুন।
ওয়ানপ্লাস:
Settings → Wi-Fi & internet → Wi-Fi preferences → “Switch to mobile data” বন্ধ করুন।
🛠️ অন্যান্য টিপস ও সতর্কতা
Wi-Fi সিগন্যাল ঠিক করতে রাউটার রিস্টার্ট দিন। এতে সিগন্যালে উন্নতি হবে।
ওয়াই-ফাই রিপিটার বা মেশ নেটওয়ার্ক রাউটার ব্যবহার করুন। বাড়িতে দুর্বল সিগন্যাল থাকলে, এতে মোবাইল ডেটার প্রয়োজন কমবে।
Settings → Data Usage দেখুন, কোন অ্যাপ অপ্রয়োজনীয় ডেটা ব্যয় করছে কি না।
Low Data Mode বা Data Saver চালু থাকলে ডেটা খরচ কম হয়, Assist কাজ কম করে।
📉 ডেটা কতটা সাশ্রয় হয়?
যদি দিনে ৫০০ এমবি Wi-Fi ব্যাকআপ করেন, দুর্বল সিগন্যালের কারণে Assist চালু থাকলে কিছু ডেটা অপচয় হয়। মাসে তা ৭.৫ জিবি পর্যন্ত বাড়তে পারে। বন্ধ করে রাখলে, অপ্রয়োজনীয় ডেটা খরচ কমবে। ফলে, আপনার ডেটার পুরোটা সঠিকভাবে ব্যবহার হবে।
📌 উপসংহার:
Wi-Fi Assist ও Smart Network Switch বন্ধ করে রাখলে, দুর্বল Wi-Fi এর কারণে ডেটা অনর্থক খরচ বন্ধ হবে। আজই Settings চেক করে এই অপশনগুলো বন্ধ করুন। এর ফলে ডেটার উপর পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
🔋 ব্যাটারি অপটিমাইজেশন মানে ডেটা ও চার্জ দুটোই সেভ করা
⚙️ পাওয়ার সেভ মোড কেমন কাজ করে?
ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ
পাওয়ার সেভ চালালে ফোন অটোমেটিক ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা অ্যাপগুলো বন্ধ করে দেয়। ফলে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও গুগল ফটোসের মতো অ্যাপগুলো ডেটা ব্যবহার করতে পারে না।
প্রসেসর কম কর্মক্ষমতা
বেশি কাজের জন্য ফোনের প্রসেসর গতি কমে যায়। এতে ফোনের পারফরম্যান্স কমে না, আর চার্জও বেশি খরচ হয় না। ডেটাও কম ব্যবহার হয় কারণ হাই–ডেটা প্রসেসিং বন্ধ থাকে।
সিঙ্ক ও নোটিফিকেশন সীমিত
এই মোডে অটো-সিঙ্ক ও পুশ নোটিফিকেশন কমে যায়। ফলে, Gmail, ক্যালেন্ডার, কন্টাক্ট যেন কম ডেটা ব্যবহার করে। এসবে ফোনে কম ডেটা ব্যয় হয়।
ডিসপ্লে ব্রাইটনেস ও স্লিপ টাইমিং কমানো
স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কম হয়, আর স্লিপ টাইম স্বল্প করা হয়। ফলে, যতবার আপনি নোটিফিকেশন দেখবেন, ডেটা ও গ্রাফিক্স কম খরচ হবে।
- শর্টকাট থেকে “Battery Saver” চাপুন।
- Settings → Battery → Battery Saver-এ যান। “তখন চালু করুন” সেটিং চালু করুন, বা ব্যাটারি কত শতাংশ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হবে সেটি নির্ধারণ করুন।
- Adaptive Battery ও Background restrictions চালু থাকুক। এতে ফোন জানবে কোন অ্যাপ বেশি ব্যাটারি বা ডেটা খরচ করে, আর নিজে সীমিত করবে।
- Settings → Battery-এ গিয়ে “Low Power Mode” চালু করুন।
- কন্ট্রোল সেন্টারে “Low Power Mode” যোগ করুন।
- এই মোড চালু হলে, অটোমেটিক কিছু ফিচার বন্ধ হয়ে যাবে। যেমন—ইমেইল, ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস, স্বয়ংক্রিয় ডাউনলোড।
- ডেটা কম খরচ: অনেক অ্যাপ ও সিঙ্ক বন্ধ থাকায় মাসে ১-২ জিবি ডেটা বাঁচে।
- চার্জ দীর্ঘায়িত: ফোন বেশি বড় চার্জ বা দ্রুত শুকোতে দেয় না। বাইরে গেলে চিন্তা কম হয়।
- ফোন দ্রুত ও হালকা থেকে চলবে: বেশি অ্যাপ বন্ধ থাকায় র্যাম ফাঁকা থাকে, হিটিং কম হয়। ফোন ফাস্ট ও সহজে চলবে।
- Dark Mode চালু করুন: OLED স্ক্রিনে বেশি পিক্সেল বন্ধ থাকায় ব্যাটারি সাশ্রয় হয়। ডেটাও কম ব্যবহৃত হয়।
- Wi-Fi প্রেফার করুন: পাওয়ার সেভে Wi-Fi স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু থাকবে। দুর্বল ক্যাপাসিটির জন্য 4G এ যেতে চেষ্টা করবে না।
- অ্যাপ স্ট্যান্ডবাই সেটিংস করুন: Settings→Apps→Optimize battery usage-এ যান। অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো বন্ধ রাখুন।
- জিওফেন্সিং বন্ধ করুন: Location permissions→Geofencing বন্ধে GPS ট্রিগার কম হবে। ফলে ব্যাকগ্রাউন্ডে ডেটা ও ব্যাটারি কম লাগবে।
📌 উপসংহার:
🔋 ব্যাটারি অপটিমাইজ করা শুধু চার্জ বাঁচায় না, ডেটাও কম খরচ হয়। পাওয়ার সেভ বা Low Power Mode চালু রাখতে থাকুন। এতে ব্যাটারি, ফোনের পারফরম্যান্স আর ডেটা সবই বাঁচবে। আজই এই সেটিংসগুলো চালু করুন, ফোন টিকে থাকবে দীর্ঘ সময় ব্যবহার উপযোগী আর ডেটা সাশ্রয়ী।
🔚লেখকের চূড়ান্ত কথা: সচেতন ডেটা ব্যবহারে কমবে আপনার মোবাইল বিল
আজকাল স্মার্টফোন আমাদের জীবনের খুবই সাধারণ অংশ। তাই ডেটা ব্যবহারে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। মোবাইল ডেটা আমাদের জন্য সুবিধার অনেক, কিন্তু একই সঙ্গে খরচ বাড়াতে পারে। অনেক সময় আমরা জানি না, কিছু সেটিংস বা অ্যাপ পারমিশন অজান্তেই বেশি ডেটা খরচ করে। এতে করে আমাদের ডেটা প্যাক খুব দ্রুত শেষ হয় আর টাকা বেশি খরচ করতে হয়।
এই লেখায় জানব কী করে স্মার্টফোনের কিছু গোপন সেটিংস, ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা, অটো-ডাউনলোড, ক্লাউড সিঙ্ক, Wi-Fi Assist, পারমিশন কন্ট্রোল আর ব্যাটারি অপটিমাইজেশন দিয়ে ডেটা খরচ কমানো যায়।
প্রথমে বুঝতে হবে, নিজের ফোনে কোথায় কত ডেটা খরচ হয়। তারপর নিয়মিত প্রয়োজন অনুযায়ী সেটিংস বদলাতে হবে। যেমন, অপ্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করে দিতে হবে, গেম ও ভিডিও অ্যাপের ডেটা ব্যবহারে নজর দিতে হবে। আর ওয়ার্লেস Wi-Fi না থাকলে কোনও ব্যাকআপ বা ডাউনলোড যেন না হয়, সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে।
অন্যদিকে অ্যাপের অনুমতি নিয়ন্ত্রণ করা খুবই দরকার। অনেক সময় আমরা অকারণে বেশি অনুমতি দেই, ফলে অ্যাপগুলো ফোনে কিছু না করলেও ডেটা খরচ করে। তাই নিয়মিত অনুমতি দেখবে ও সীমিত করবে সাবধানে।
সংক্ষেপে ডেটা সেভ মানে টাকা বাঁচানো নয়, এটা ফোনের পারফরম্যান্স আর ব্যাটারিরও ভালো রাখে। এখনই এই সেটিংসগুলো নিজের ফোনে চালু করুন। নিয়মিত দেখভাল করতে থাকুন। ডেটা সেভিং অ্যাপ বা Data Saver Mode চালু রাখুন সহজে।
অন্তিম কথাটি হলো, ডেটা সাশ্রয় একটা নিয়মিত স্বাভাবিক অভ্যাস। যত বেশি সচেতন থাকবেন, তত বেশি উপকার পাবেন। আপনার ফোনের পারফরম্যান্স বাড়বে, খরচ কমবে আর জীবন আরও স্মার্ট হবে।
আপনার ডেটা, আপনার নিয়ন্ত্রণ! আজই শুরু করুন এবং ফোনের ব্যবহার আরও সাশ্রয়ী আর নিরাপদ করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url